স্মৃতিময় শৈশব…

এই তো সেদিনের হাফপ্যান্ট পড়া
কোঁকড়া চুলের এই আমি,
স্কুলমাঠের কড়ই গাছের নিচে বসে
সবুজ মাঠের পানে তাকিয়ে থাকা  
পায়ের কাছে আছড়ে পড়ত দল বেঁধে
অনেক দূর পাড়ি দেয়া সবুজ ঘাসের ঢেউ।
মাঝে মাঝে সে ঢেউ গোনার ব্যর্থ চেষ্টা
আবার হারিয়ে ফেলতাম একটু পরেই।
কখনো-বা আকাশের দিকে।
দুপুরের বৃষ্টিভেজা রোদে মাঝে মাঝে
একটা সোনালি ডানার চিল উড়ে বেড়াত।
করুণ সুরে ডেকে উঠত হঠাৎ হঠাৎ।
আরও উদাস হয়ে যেতাম।
কখনো কখনো  স্কুল থেকে ফেরার পথে
ভঁয়ে কেঁপে উঠতো বুকটা
যখন দেখতাম, চারদিক আঁধার হয়ে
আকাশ কালো করে ধেঁয়ে আসছে বৃষ্টি ।
ছাতা ছিল না, তাই ঝুম বৃষ্টির কবল থেকে
বইখাতা বাঁচাতে এক হাতে স্যান্ডেল ,
এক হাতে বই নিয়ে দিতাম ভোঁ দৌড় !
মাঝে মাঝে রাস্তার কাদায় পিছলে পড়ে
কাদামাখা ভূত হয়ে ফিরতাম বাসায়।
মা ব্যর্থ চেষ্টা করতেন আঁচলে  মাথা মুছে দেয়ার।
মায়ের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে
দৌড়ে লাফিয়ে পড়তাম পুকুরে।
পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে যখন পড়তো
বৃষ্টির ফোঁটা, অদ্ভুত শব্দ করত।
অবাক হয়ে শুনতাম সেই শব্দ।
দীর্ঘ সময় পুকুরে দাপাদাপির পর
চোখ লাল করে সে ফিরতাম।
মা আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন
সাথে মমতায় ভরা বকা-ঝকা।
শান্ত ছেলের মতো পুঁটি মাছের ভাজি দিয়ে
গোগ্রাসে গরম ধোঁয়াওঠা ভাত গিলে,
গল্পের বই নিয়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়তাম
টিনের চালে তখন একটানা বৃষ্টি, ঝম ঝম শব্দ।
বাইরে সজনে গাছটা উড়ে চলে যেতে চাইত ।
কলাগাছের পাতায় চলত বাতাসের দাপাদাপি।