তোমার মায়া আমারে আর বাঁচতে দিলো না,
না তোমারে পাইলাম,
না তোমারে ছুঁইলাম,
কলিজা পুইড়া আঙ্গার হইয়া গেল,
শীতের শ্যাষে বসন্ত আইলো,
ডালে ডালে ফুটলো লাল শিমূল।
হ্যার পরে-ও, তুমি আইলা না।
গাঙের পানি হুকাইয়া গেল,
বুকের মইধ্যে মুচরাইয়া উঠলো,
দাগী পাখি কি আর ফাঁদ ভুইল্লা যায়?
তোমার লগে চান্দের আলোয় রাইত কাটামু,
এই ইচ্ছাতেই কাইট্টা গেল আমার আন্ধার জীবন,
এতো কিছুর পরেও, তুমি জোছনা হইলা না।
আকাশে চিল আর ডাহুক ডাইকা উঠলো,
আগুন জ্বইলা কয়লা হইলো,
ফাগুন আইলো, আইলো বৈশাখ,
অশ্রু দিয়া ছিদ্র করলা বুকের ভিতর।
সাধ আছিলো তোমারে লইয়াই মরুম,
নয় ঘর করুম! মাটির ঘর,
সে ঘর আর আমার, ঠাঁই পাইলো না।
ধানের ক্ষ্যাতে উথাল-পাথাল হাওয়া বইলো,
পাখিদের গানও থাইমা গেল,
বুকের ভিতরে ক্যামন জানি হাহাকার জাইগা উঠলো,
কাইন্দা কাইন্দা বিধাতারে শেষ নিশ্বাসে ডাইকা উঠলাম,
হক্কল কিচ্ছু সহ্য কইরাও, তোমারে পাইলাম না।
জীবনডাও ঝর্ণার মতো ঝইড়া গেল,
আঁধার রাইত্তের বাত্তি গুলানও নিভভা গেল,
এহনো জানলা খুইলা চাইয়া থাহি,
মনে লয় একদিন তুমি ফিরবা,
কত্তো দিন কাইটা গেল, তুমি আর ফিরলা না।
তোমার কথা ভাইবা ভাইবা দিন কাডাইতাম,
জোছনা রাইত্তের দোহাই দিতাম,
বকুল তলায় বইসা কইতাম—
"তুমি ছাড়া জীবনডা ভীষণ শূন্য লাগে!"
তবুও তুমি আইলা না গো, আইলা না।