ওরা
আজ ধমনী জুড়ে চিৎকার শুরু করেছে ওরা
শিরায় শিরায়, শাখাপ্রশাখায়, ওদের অবাধ বিচরণ
দুর্বার গতি, অলঙ্ঘ্য প্রবাহ
পদে পদে বিস্ফোরণ !!!
অসহায় ওদের শরীর, আচ্ছন্ন ওদের মন
এক-এক করে প্রত্যেকটি কপাট খুলে দিচ্ছে ওরা
উম্মুক্ত করছে নতুন সব পথ
শিউলি ভরা, তবে রক্তরাঙা
রক্তের ঘ্রাণ নেয় ওরা, শিউলির নয়
কারণ ওরা জানে শিউলির আছে মিষ্টতা,
রক্তের আছে আকর্ষণ
বিলাসী নয়, কর্মমুখর ওরা
তবে কেন নেবে শিউলির আঘ্রাণ ?
চোখে দেখবে লোহিতবর্ণ, পরিপূর্ণ হবে শরীর-মন
না হবে নিস্তেজ, না হবে নিঃশেষ
বারংবার দ্বারস্থ হবে "বেনীআহসকলা"-র "লা"-এর
বা যে নামই হোক
রক্তাক্ত প্রেম বা আলতামাখা বিদ্বেষ !!!
রক্তাল্পতা
আঁখিজোড়া হ'তে বইছে রক্তধারা
কখনো তপ্ত লাভার মতো
কখনো হিমশৈলের ন্যায় শীতল
যাই হোক না কেন
লোহিতবর্ণ তার, আছে - অদ্ভুত এক আকর্ষণ !
কখনো আকাশের বুক ভেঙে
কখনো মেদিনীর বুক চিরে
গিরিছে রক্তবারি - দেখি, সব ফুলেফেঁপে উঠেছে...
কেন এত লাল কেন, কাদের এত হাহাকার
রক্তিমই বা কেন, কেন অন্য কোনো রং নয়
সবুজ বা হলুদ হলে কি তা আর রক্ত নয়...
বিন্দু বিন্দু ঝরে, ক্রমে আধার হয় পরিপূর্ণ
করো পান, নিয়ে দেখ আস্বাদ
ভয় নেই, রক্তিমাভ নয়, তবে তো রক্ত নয়...
শুষ্ক বেলাভূমি হয় সিক্ত
উদাসী মনন হয় তৃপ্ত
তবু কোনো শব্দ নেই কেন
ঝরছে তো অবিশ্রান্ত
কোথা থেকে আসছে এত...
তবে কি রামধনুরই একটি রং চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ছে
ধনুর শ্রী হারিয়ে, ধরিত্রীর শ্রী ফিরিয়ে...
একি ভীষণ প্রতিবাদ, এত বিপ্লব ?
পৃথিবী আজ রক্ত চাইছে
পিপাসু শরীর, বুভুক্ষু মন
কণ্ঠনালী বেয়ে ক্ষীণধারা
ফিরিয়ে দিচ্ছে প্রাণ, ও বুঝেছি !
এ পৃথিবীরই রক্তাল্পতা
ফিরছে এ পৃথিবীরই প্রাণ !!!
** ২০০০, কলেজজীবনে লেখা..