বিজয়ের উল্লাসে উচ্ছ্বসিত মন শুনতে পায়
দৃশ্যের আড়ালে লুকায়িত আটকা-পরা প্রজাপতির নীরব কান্না!
যেখানে স্বাধীনতা পেয়েও খুঁজি নতুন সঞ্জীবনী শক্তি;
যেখানে সূচীপত্রহীন আজ আমাদের জীবন-যাপন তথা;
আমাদের বিশ্বাস; যেখানে আগুনের ধ্বনিতে পুড়ে নিষ্প্রাণ নগরীর শ্বাস-প্রশ্বাস; পাড় ভাঙে নদীর; খোলা জানালায় ঝরে যায় প্রাণহীন শত নক্ষত্রের গুঞ্জন!
বিজয়ের পতাকা হাতে বুকের ভেতর ভালবাসাগুলো
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বোবা সুরে বলে,
আমায় কলংকমুক্ত করো,নিজেদের ভালবাসো
আমাকে ভালোবাসো। মা-কে ভালবাসো!
স্বাধীনতা ঘেরা আমাদের বিজয়, সে-কি;
মৃত নদীর উড়ে যাওয়া বাষ্পে ছিলো?
সে-কি? মায়ের সফেত শাড়ির ভাঁজে বেশুমার শুকে
আহত নিদারুণ চোখের জল?
কপালে হাত রাখা বীরাঙ্গনার একাকী জীবন নাকি
হাটু গেড়ে বসা মুক্তিযোদ্ধার চোখে বুলেট ঝাঁঝানো হাহাকার?
স্বাধীনতা সে-কি আজ সংলাপহীন ? বিমূর্ত?
বিজয়ের সুখ সে-কি আজ কেবল কাগজে-কলমে- লেখনীতে?
মানুষের জন্য চালিত রাষ্ট্র, মানুষ দিয়েই চালিত;
তবু মানুষ হতে পারেনি কিছু মানুষ,তাই যুদ্ধ এখনও থামেনি!
আজও ঠিকানাবিহীন শবদেহ অযুত দীর্ঘশ্বাস বুকে
শরীর জুড়ে মৃতিকার সিক্ততায় দিন গুণে,
কবে হবে নিরসন, মানুষের বুভুক্ষু হৃদয় আর্তনাদের?
কবে ঘর্মাক্ত মজুরের শরীর ছুঁয়ে তার উত্তাপ সয়ে;
মানুষ সহাস্যে দিবে মানুষের মুল্যবোধ?
আর কত বিবর্ণ হবে আমাদের বোধের আকাশ?
আর কবে জানবো বিজয়ের মানে?
বিজয়! বিপুল সম্ভারে এসেছিলো!
থামিয়েছিলো রক্ত ঘামের মাতম!
আজ চুয়াল্লিশ বছর পরেও ভাবি;
সে-কি? অষ্টাদশী রোদ হয়ে ছুঁয়ে যাবে আবারও
লাল সবুজ পতাকার বুক? সুহৃদ আত্মবিশ্বাসে;
পথে-ঘাটে-প্রান্তরে আবারও কি ফসলী শরীরের মতো
আগুন্তুকের ঘ্রাণে ভরে দেবে
আমাদের না-পাওয়া গভীরের ক্ষত?
(বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা সকল লেখক এবং পাঠকবর্গকে)