আমি আজ নেই জানি, তবুও
আমার অবয়ব পাবে আমতলা গ্রামে
একবার এসে দেখে যাও বন্ধু,
আমার শৈশব আর কৈশোর,
যদিও পথ বড় কাঁচা ,কিছুটা বন্ধুরও বটে;
থকথকে কাদায় পায়ের চপ্পল উধাও!
তবু মেঠোপথে মাটির বুনোগন্ধ;
বন্ধুর মত জড়াবে তোমার চিবুক
আর তখনই ছুঁয়ে যাব আমি তোমাকে।
রাস্তার পাশেই ছোট টঙ্গী দোকান
মধুকাকা আজও চশমার কাঁচ ডিঙ্গিয়ে
চানাচুর, মটর আর আটার বিস্কুট বিক্রির প্রয়াসে ব্যস্ত!
একপাশে একখানা রেডিও।
একটু এগোলেই বাড়ির সামনে এঁদোপুকুর
এ সময়টায় মাছ ধরার তুমুল বাড়াবাড়ি
ওপাশটায় দেখতে পাবে কেউ একজন
মাছের নেশায় বিভোর….. আমগাছের ছায়ায়
গান গেয়ে যাওয়া সেই হলাম আমি।
বাড়িতে ঢুকতেই শিরশিরে বাতাস
ঘিরে রবে তোমার চারপাশ,এ আর কিছু নয়
এ আমারই বন্ধুত্বের প্রকাশ
বাড়ীটা যদিও মাটিঘেঁষা;
তবে পাবে শিউলির বনে বিছানো হলুদ সুখ!
যেখানে শিশির আর শিউলির ভালবাসার কথন
কান পাতলেই শুনতে পাবে।
সবুজ লতায় ঘেরা মাচাভরা লাউয়ের ডগা
ফ্যালফ্যাল করে নির্লজ্জের মত হাসছে দেখবে!
তুমি ভেবনা, ও কিছু নয়, এ তার অন্তরের মায়া।
হঠাৎ দেখবে, তোমাকে পাশ কাটিয়ে দুরন্ত বালক
এক হাতে তার লাটিম অন্য হাতে গুলাইল;
তোমাকে দেখেই সে দৌড়ে পালাবে,
বুঝে নিও সেই হলাম আমি।
ভর দুপুরে প্রখর রোদে তোমার ছায়ার পাশে
আর একটি ছায়া, সেখানেও আমি।
আধো ছায়া আধো আলোয় মাঝ রাতে
আঙ্গিনা জুড়ে জোনাকির মেলা যেন
মাতাল হাসনাহেনার গন্ধে মন দোতারা!
ভোরের আবছা আলোয় বাড়ীর বেড়ার ফাঁকে
একজোড়া চোখ, সে অন্য কেউ নয়
আমারই কৈশোরের ভালবাসা।
একবার এসো বন্ধু , নিমন্ত্রণ জেনো,
না হয় আমি নেই , তবুও আমি আছি !
আমার শৈশব কৈশোরের আবির মাখা
সকাল সন্ধ্যায়, মিষ্টি আবেশে জড়িয়ে তোমায়।