আমি বলছি আমি!
এ বছর খরায় যদিও ঝরে গেছে আমার সবুজ ডালপালা
বাকি আছে কিছু খয়েরী পাতা;
যা এখন আধা-খাওয়া গাছ পোকার দখলে
তবু আমি আছি আমি!
আমার ভেতরের আমিত্ব নিয়ে আমি আছি আমি!
গেল বছর সারা বছর জুড়ে,দেখা হয়েছিল তার সাথে
কিছু আলাপন, কিছু ছোট-বড় প্রেমের খসড়া উড়িয়ে
সময়ের আহলাদ মেখে গায়ে; আমরা জন্ম দিয়েছিলাম আমাদেরই
সদ্য প্রসূত কাব্য শিশুকে! তাই তাকে লালন-পালন করতে
বেঁচে রইলাম এখনও আমি!
হ্যাঁ আমি আছি আমি!
আমার শেকড় থেকে মাথা পর্যন্ত;সমস্ত শরীর জুড়ে
প্রতি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে যার এতটা প্রভাব; যেখানে নগর বাউল
মাটির গন্ধে ঠোঁটের বানানে বিশুদ্ধ অক্ষরে গেয়ে যায়
আমাদের অষ্টাদশী রোদের প্রতি স্তবকের দাড়ি-কমা;
কিংবা আছে যত যতিচিহ্ন!
এখন যদিও আমাকে এড়িয়ে দ্রুত চলে যায় কত আন্তঃনগর ট্রেন,
মাড়িয়ে কাক ভেজা ভোর;কিংবা ছুঁয়ে আটপৌরে সময়ের ঘুমন্ত শরীর!
তবুও আমার চোখে ঘুম নেই; আমি আছি জেগে!
বলতেই পারো; এ আমার জন্মগত গভীরের ক্ষত; কোন এক বনেদী বিশ্বাস; বলতেই পারো; শত শত আলোর মৃত্যুর মাঝে;
এ আমার একটিমাত্র বিশ্বাসী ঝকঝকে আয়না! সোনালী সুহৃদ!
আমার ভালবাসার একমাত্র আশ্রয় কিংবা ভেতরে ঘুমন্ত মাটিকে
বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র প্রশ্রয় ! ঘাসের চাদরে মোড়া ঢেকে থাকা
গোপন দরজা!
তাই আমি রয়ে যাই, নিরুত্তর প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিতে,
আমি রয়ে গেছি,মন্ত্র মুগ্ধের মতো তোমার আজন্ম পাঠক হয়ে
কেননা আমি জানি, রাতের নাজুক শরীর ছুঁয়ে
জন্ম নিবে নতুন ভোরের বিস্তৃত অক্ষর।