গত ১১ আগষ্ট ২০১৮ শনিবার আসরের বরেণ্য কবি জালাল উদ্দিন মুহম্মদের সভাপতিত্বে ও সপ্রতিভ কবি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলা কবিতা আসরের নতুন আন্দোলন - "আলোর মিছিল"এর ঢাকা কেন্দ্রিক কবিদের নিয়মিত আড্ডা।
১৩তম আড্ডার আসর কবি ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আসরের প্রতিশ্রুতিশীল কবি আফরিনা নাজনীন মিলি। পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী বিকাল চারটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলে কতিপয় বিশিষ্ট কবির অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের দারুণ কিছুটা দেরিতেই শুরু করতে হয় অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানসূচি মোতাবেক দুটি বিরতিসহ অনুষ্ঠান চলে রাত নয়টায় শেষ হয়।
শুরুতেই আসর কবি ও আসর সভাপতি আসন গ্রহণ করেন। আসর কবিকে ফুল ও সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) এবং অন্যান্য কবিদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। সভাপতির অনুমতিক্রমে সঞ্চালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। সঞ্চালক প্রথমেই আসর কবির জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন। তারপর শুরু হয় আসর কবির কবিতা পাঠ। আসর কবি পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সেইসঙ্গে কবিতার প্রাসঙ্গিকতা ও প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন।
আসর কবির মূল পর্ব শেষ হলে উপস্থিত কবিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নিজ নিজ পরিচিতিসহ স্বরচিত কবিতা পাঠের জমজমাট আসর চলে রাত সাড়ে-আটটা পর্যন্ত।
তারপরই আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ - যার জন্যে আজকের আসরের সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। গত আড্ডায় উপস্থিত প্রায় দুই ডজন কবির পাঠকৃত কবিতা, আলোচনা, আসর কবির জীবনবৃত্তান্ত ও তাঁর অভিব্যক্তির প্রকাশ ইত্যাদি রচনাবলীতে সজ্জিত বিশেষ আর্কষণ ‘আলোর মিছিল' - (বাংলা-কবিতা আসরের সাহিত্যপত্রের) প্রথম সংখ্যাটির মোড়ক উম্মোচন। মাননীয় সভাপতির নির্দেশক্রমে মোড়ক উন্মোচন করেন সম্পাদক কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল।
বেড়িয়ে আসে ঝকঝকে মলাটে বাঁধাই সেই কাঙ্ক্ষিত সাহিত্যপত্র - 'আলোর মিছিল'। সবাই হর্ষোৎফুল্ল হাততালিতে ও আনন্দে-উৎসাহে বরণ করে নেয় বাংলা-কবিতা আসরের প্রথম সাহিত্য সংকলনটিকে। আলোর মিছিল যেন আসরটিকে আরও আনন্দঘন করে তুলেছিল।
ধন্যবাদ জানাই সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলকে - যিনি নিজ উদ্যোগ ও অর্থায়নে অনেক বাঁধা অতিক্রম করে আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নকে আজ সফলতার আলো দেখিছেন। সাথে ছিলেন ছান্দসিক কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান। যিনি অসুস্থ শরীর নিয়েও প্রচ্ছদ পরিকল্পনা ও অলংকরণসহ সর্ববিধ কাজে সহযোগিতা করেছেন। উভয় কবিকেই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার জানা মতে, ৩০০ টাকা বিনিময় মূল্যে অনেকেই ৫ কপি করে সংগ্রহ করলেও কী জানি রহস্যজনক কারণে কোন কোন কবি তা করেননি। আমার কাছে বিষয়টি বেশ পীড়াদায়ক ও অসঙ্গত বলেই মনে হয়েছে। আমি আশা করব, কবি হিসাবে ব্যক্তিগত সংকীর্ণতাকে জয় করে আমরা আলোর মিছিলের আলোয় উদ্ভাসিত হব। ঐক্য-সাম্যে বলিয়ান হয়ে কবিসত্ত্বার যথার্থ পরিচয়টিই তুলে ধরব।
সবশেষে ফটোসেশন ও আসর সভাপতির ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সৌহার্দ্রপূর্ণ পরিবেশে আড্ডার এই অনুষ্ঠান যখন শেষ হয় - ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন নয়টা ছুঁয়েছে। আবারো দেখা হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে কবিবন্ধুদের কাছে বিদায় নিয়ে কিছু সুন্দর স্মৃতি হাতে যে যার বাড়িতে ফিরে এলাম। স্বাস্থ্যগত কারণে আমার অনুভূতি ব্যক্ত করতে একটু দেরি হয়ে গেল। সবাইকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল।