প্রতিদিন রাতে আমার বুকের ভিতর থেকে,
একটি অভিজাত কুকুর
ঘেউ ঘেউ করে বেড়িয়ে পড়ে
একটি অচেনা পথে।
প্রথমে সে পূর্ব থেকে পশ্চিমে
এক নিঃশ্বাসে প্রদক্ষিণ করে,
তারপর উত্তর থেকে দক্ষিণ।
আমি প্রতিবারই বেড়িয়ে পড়ি
সেই কুকুরটার খোঁজে।
আমার কুকুরটাকে খু্ঁজতে গিয়ে,
প্রথমে আমার সাথে দেখা হয়
এক কমিউনিস্ট মদ্যপ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে।
যার বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর
আজ নীতি ও মানবতার কথা বলে এসেছে
পল্টনের ভরা সমাবেশে।
তার কাঁধে বস্তা ভর্তি টাকা,
হাতে এক বাক্সপেট্রা সোনার বার,
আর মোঘল সাম্রাজ্যের একটি বিলুপ্ত কালো মূর্তি।
মনে হলো, এই বুঝি কোনো রহস্যপুরীর তলপেট কেটে বের হয়ে এসেছে।
আমি নিজেকে নিয়ে শহরের সবচেয়ে প্রাচীন ল্যামপোস্টের কাছে দাঁড়ালাম।
ও খোদা, আমি এসব কি দেখছি?
এতো দেখি,
আমাদের মহল্লার মসজিদের ইমাম সাহেব।
যে নগ্ন প্রচ্ছদ,
বহুদিন আচ্ছাদিতো ছিলো দিনের কোয়াশায়।
তাকে দেখি,
বুক উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা চন্দ্রিমা উদ্যানের
এক নিশিপরীর সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে
ফিসফিস করছে।
আমার বিতর্কিত পা আর চোখ ইতোমধ্যে সমান্তরাল দন্ধে মগ্ন।
কেউ ই যেনো
কোনো কিছু বিশ্বাস করতে চাইছে না।
অত:পর আমি শিমুলতলার ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সামনে গিয়ে অবস্থান নিলাম।
যে ফাদার আর সিস্টার,
দৈহিক বাসনা বিবর্জিত বলে জানতাম।
তারা পৃথিবীর এই চিকচিকে অভ্যস্ত অন্ধকারে স্বর্গীয় সঙ্গমের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
আমি নিজের অবিশ্বাসী স্বত্বাকে ভর্ৎসনা করতে করতে
উল্টো দিকে হাঁটা দিলাম বাসার দিকে।
আমার কুকুরটাও ঝিমাতে ঝিমাতে
আমার পিছু নিলো।
পথে পেলাম এক ষাটোর্ধ ব্রাহ্মণকে
পরিচিত এক নমশূদ্র যুবতী মেয়ের পায়ে পড়ে
ভড়কে যাওয়া যৌবনকে
রোমন্থন করছেন অপ্রস্তুত উল্লাসে।
আমি দীর্ঘ এক করুণ রাতের
লাল নীল অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
ততক্ষণে পৃথিবীর কোলে
নেমে এলো একঘেয়ে সূর্য।
সে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়ে বললো....
আজ বিকেলের জনসমাবেশে
আবারো সেই কন্ঠে লাগবে চেতনার হাওয়া
হাত তালি, স্লোগান আর মিথ্যে আশ্বাসে
বার বার কেঁপে উঠবে
পল্টনের রাজনৈতিক উপাসনালয়।
আবারো সেই ইমাম,
মাথায় গুজে নিবেন ধবধবে সাদা টুপি।
ধর্মপ্রাণ সহজ সরল মানুষের কোরআন খতমের টাকায় ফেঁপে উঠবে ইমাম সাহেবের পকেট।
মসজিদের পবিত্র মিম্বর দোলবে
পাপ পূন্যের নিশ্চিত দোলায়।
শিমুলতলার ফাদার আর সিস্টার
বিগত রাতকে অস্বীকার করে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টের আঁকা বাঁকা পথ ধরে।
নেমে পড়বে বিতর্কিত ঈশ্বরের খোঁজে।
আর সেই ব্রাহ্মণ;পাশ দিয়ে চলে যাওয়া
এক নিম্ন বংশীয় নমশূদ্র যুবতীর
কচি শরীরের ঘ্রাণ পেয়ে
রাম রাম বলতে বলতে
স্নান করতে যাবে চন্দন জলে।