আজও প্রণাম জানালাম তোমার ঐ গৌর শ্রীচরণে
প্রতিদিনের মতো
দূর থেকে...
কাছে যাবার যে কোনও উপায় নেই আমার !
রোজ এই সময় গঙ্গাস্নান করে আমার বাড়ির সামনের পথ ধরে তুমি চলে যাও
দৃপ্ত পদক্ষেপে , উন্নত শিরে , কোনওদিকে বিন্দুমাত্র দৃকপাত না করে !
তুমি পথের বাঁকে মিলিয়ে গেলেই দৌড়ে গিয়ে রাস্তা থেকে তোমার পদধূলি নিয়ে মাথায় ঠেকাই ,
সমস্ত শরীর, মন শান্ত , পবিত্র হয়ে যায় ।
তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম গঙ্গার ঘাটে, কিছু শ্লোকের ব্যাখ্যা করে শোনাচ্ছিলে পুণ্যার্থীদের ,
অপূর্ব শ্রুতিমধুর সে কন্ঠস্বর, যেন স্বর্গের দেবতা কথা বলছেন !
সব কথার অর্থ বোঝার মতো বিদ্যা বা বুদ্ধি আমার ছিলো না,
কিন্তু একটা কথা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিলো –
“ পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয় ”!
মনে হয়েছিলো, এই নরকে আকন্ঠ ডুবে থাকলেও নরকের পঙ্ক আমাকে পঙ্কিল করতে পারেনি !!
মনে মনে তোমাকে গুরুর আসনে বসালাম,
হে প্রভু, দেবতা আমার, একলব্য আমি ,
দূর থেকেই তোমার নিত্যপূজা করি ,
বুঝিনি প্রভু, কখন আমার পূজার ফুল ভালোবাসা হয়ে গেছে !!
অবশেষে , এলো সেই দিন...
অসীম সাহসে ভর করে তোমার যাত্রাপথে গিয়ে দাঁড়ালাম,
অবগুন্ঠনবতী আমি আভূমি আনতা হয়ে প্রণতা হলাম তোমার পদপ্রান্তে ,
কিন্তু এ কী !!
শিউরে উঠে দু’পা পিছিয়ে গেলে তুমি ,
বলে উঠলে “ ছিঃ !!”
কেন এই ছিছিক্কার প্রভু ??
আমি পতিতা বলে ?
তুমিই না বলেছিলে “ পাপকে ঘৃণা করো , পাপীকে নয় !”
তবে কি মিথ্যা ছিলো তোমার বাণী !!
কিন্তু আমার ভক্তি তো মিথ্যা নয় প্রভু
দেবতাসম পূজেছি তোমায় ......
তোমার এই ধিক্কার, ভর্ৎসনা, ঘৃণা
তবে তাই হোক এ পতিতার প্রতি দেবতার করুণা !!