ভালোবাসা।
কবিঃ শিউলি নন্দন।
ভালোবাসা
তুমি আজকাল বড্ড আটপৌরে হয়েছো
আমি তো তোমায় পুরোনো বাক্সে
ন্যাপথলিন দিয়ে যত্নে মুড়ে রাখবো
মনে মনে এই ভেবেছিলাম।
কিন্তু হঠাৎ করে ভাবনার মেঘ জমলো
যদি তুমি ভাঁজে ভাঁজে কেটে যাও ফেঁটে যাও,যদি শতছিন্ন হয়ে এলোমেলো হও
বৃথাই যাবে যত্নআত্তি আদর আপ্যায়ন।
তুমি বরং আটপৌরেই থাকো তাতেই তোমায় করবো সাদরে গ্রহণ।
আলোচনাঃ
আলোচ্য কবিতার শিরোনামঃ "ভালোবাসা"
কবি শ্রীযুক্তা শিউলি নন্দন।
ভালোবাসা শব্দবন্ধটি উচ্চারণ করলেই মনে এক শান্তস্নিগ্ধ বোধ ও ভাবের গোলাপ পাপড়ি মেলে,এটি মানুষের আটপৌরে জীবনেরই এক স্বর্ণালী ও বর্ণালী অনুষঙ্গ। ভালোবাসার নিজস্ব কোন রঙ নেই,জলের মতো পাত্রভেদে তার রঙ ধারণ, প্রথমেই বলা যায় নিজ জীবন ও জগতের প্রতি ভালোবাসা, মা বাবা ও সন্তানের মধ্যে ভালোবাসা, সহোদর ভাইবোনের মধ্যে ভালোবাসা,স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা,প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা, আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীর ভালোবাসা, ধন সম্পদ ও মানসম্মানের প্রতি ভালোবাসা, গৃহপালিত পশু পাখির প্রতি ভালোবাসা ধর্মকর্মের প্রতি ভালোবাসা,সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রাণী অপ্রাণী সকল বস্তৃও বিষয় সমুহের প্রতি ভালোবাসা। ভালোবাসার গমন ও গন্তব্য বহুগামী, রোজ রোজ ভালোবাসার প্রয়োজন, নইলে আটপৌরে জীবন অচল, সুতরাং এটা কবির জানা। একে ন্যাপথলিনে যত্নে মুড়ে বাক্সবন্দী করে রাখা কবির আদৌ আসল উদ্দেশ্য নয়, কবির বলবার বিষয় ও উদ্দেশ্য বরং এটাই যে, এই কথা ও কবিতা মারফত তিনি আমাদেরকে হুসিয়ার ও সাবধান করে দিচ্ছেন, খবরদার ভালোবাসাকে আলমীরা ও বাক্সবন্দী করনা, রোজ রোজ ভালোবাসার চর্চা করো। নইলে জীবনের সারসত্য ভাঁজে ভাঁজে কেটে যাবে ফেঁটে যাবে,শতছিন্ন ও এলোমেলো হয়ে যাবে ভালোবাসাহীন জীবন। ভালোবাসা ছাড়া হাজার যত্নআত্তির কোন দাম নেই মুল্য নেই, বরং ভালোবাসার ক্ষুদ্র একটি চুমো একটি আদর সূচক বাক্য এক চিমটি খাদ্যকণাও বহুমুল্য। সুতরাং শুধু পার্বণ ও বিশেষ উৎসব উপলক্ষ্যে নয়, সদা সর্বদা আটপৌরে জীবনের উঠোনে ভালোবাসার রোদ বৃষ্টি বায়ু লাগিয়ে জীবনকে সতেজ ও তরতাজা রাখা চাই,কবির ইশারা ও ইঙ্গিত সেই দিকেই।
আন্তরিক অভিনন্দন ও ভালোবাসা প্রিয় কবি শিউলি নন্দন।
কবি পরিচিতিঃ
কবি শিউলি নন্দন।
জন্ম ১৫ ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ ইং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলায়।
পিতা শ্রীযুক্ত তাপস নন্দন, মাতা শ্রীযুক্তা লক্ষী নন্দন। পড়াশোনা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিতা ও এক কন্যা সন্তানের জননী।
কবিতায় কলম চর্চা, আবৃত্তি ও কন্ঠশীলন তাঁর শখের অভ্যাস।
কবির নিজস্ব স্বীকারোক্তি এখানে উল্যেখযোগ্যঃ "কবিতাতে বাঁচি কবিতাতেই মরি, কবিতার প্রতি ভরসা করি ভীষণ রকম, কারন কবিতা বিশ্বাসঘাতী নয়"
বাহ্ এটাই খাঁটি কবির পরিচয়।
আলোচকঃ
মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন।
কবিও সমালোচক।
গ্রামঃ জামালপুর, থানাঃ জগন্নাথপুর।
জেলাঃ সুনামগঞ্জ,
বাংলাদেশ।
তারিখঃ ২৫/০৬/ ২০২০ ইং