কবিতাঃ হারানো দিন।
কবিঃ রুনা লায়লা।

আলোচনাঃ
আলোচ্য শিরোনামা কবিতাটি পড়ে আমার মনে হলো,এটি কোন এক প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞজনের জীবনের প্রান্তসীমায় পৌঁছে ব্যক্তিক অনুভব অনুভূতির এক সরল বিবরণ,আত্মস্নৃতি ও বিস্মৃতির অর্জন আর বর্জনের সাদামাটা উপস্থাপন। কবির মানসলোকে এর ছায়া কায়াধারী হয়ে কবির কলমে ভর করেছে কবিতা রূপে ভূমিষ্ঠ হতে।
আমরা কবিতার আদলে পড়ছি এক স্মৃতিময় কথোপকথন যেখানে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক নদী, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর যার তীরে দণ্ডায়মান "নদীর নাম বুড়িগঙ্গা" এর জল ঢেউয়ের তরঙ্গ নাও বৈঠা দাড় মাঝি,ভাটিয়ালি গান সকল অনুষঙ্গের সাথে কথিত প্রাজ্ঞের ছোটবেলাকার দিনলিপি সেকাল থেকে একালের মানুষের শহর ও গ্রামীন আবহের দৈনন্দিন জীবনের এক তুলনামূলক চালচিত্র।
কবিতার অন্তরঙ্গ ও বহিরঙ্গে এক মানবতাবাদী হৃদয় বেদনার নীরব অশ্রু চিকচিক করছে মুক্তোদানার মতো যে সুখী সে সুখ তাঁর কাছে উপভোগ্য হতে পারছেনা, পারিপার্শ্বিক আবহ ও জীবন নদীর দুইতীর দুইধারে কতো মানুষের  বেহালদশা চোখে পড়ে ,জীবন অঙ্কের হিসাব মেলাতে বসা এই মানুষের।
যখন কবির কলম আর কবিতা মারফত আত্মজীবনীমূলক জবানবন্দিতে তিনি বলে ওঠেনঃ "মন কাঁদে যদি হতাম তাঁদের দলে/যাদের কথা ভেবে কাঁদে মন/যারা দুর্গন্ধময় পানিতে ভাসছে/কোথায় তাদের শোবার ঘর/কোথায় তাদের শৌচাগার/প্রার্থনা বা খাবার ঘর?/কিভাবে কাটছে তাদের জীবন?/বয়স হলেও তার ভারে নুয়ে পড়িনি/ নুয়ে পড়েছি মানুষের চিন্তায়।
সমগ্র কবিতা ও উদ্ধৃত পঙক্তিচয়ের আলোকে বলা যায় এ এক স্বার্থক মানবতাবাদী চরিত্র চিত্রায়ন, মানুষের প্রতি এক মানবতাবাদী মানুষের দায়বোধ  ও মমতার চুক্তিনামা। যিনি এর সম্পাদক তার পক্ষে কবি রুনা লায়লার কবিতা এক বিশ্বস্ত সাক্ষী ও ঘোষক।
যিনি এই কবিতার উপজীব্য সেই মহান মানবতাবাদী মানষ ও  এই কবিতার লেখক উভয়কেই আমাদের টুপিখোলা অভিবাদন ও লাল সালাম জানাই।
জয় হোক মানবদরদী চিন্তা চেতনার, জয় হোক মানবতাবাদী কবি ও কবিতার।

আলোচকঃ
মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন।
গ্রামঃ জামালপুর,থানাঃ জগন্নাথপুর,
জেলাঃ সুনামগঞ্জ, বাংলাদেশ।