বাইশে শ্রাবণ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তিরোধান দিবস।
এ উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাবার নানা আয়োজন,এ উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের অজানা বিষয় নিয়ে লিখবার প্রস্তাব করলেন এক কবিবন্ধু ফেসবুকে অনেকেই লিখলেন আর আমি দেখলাম, শেষমেষ আমাকে ও শামিল হতে অনোরুধঃ কি আর করি গিলতে পারলাম না তো বটেই ফেলতেও না পেরে এই আলোচ্যের অবতারণাঃ
শুরুতেই বলবো রবীন্দ্রনাথ এমন এক মহান ব্যক্তি ও চরিত্র,যার নাম অক্ষর সাক্ষর নিরক্ষর সকল বাঙালিই জানেন এবং রবীন্দ্রনাথ বাঙালির এক প্রাত্যহিক চর্চার নাম। তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি এতই আলোচিত যে এ ব্যাপারে অনূদঘাটিত অজানা কথা খুঁজে পাওয়া দুস্কর।
আমি যা অজানা বলে উদ্বৃত করলাম দেখা গেল মনে মনে তা সকলেরই জানা, অতঃপর আমাকে নিয়ে চোখটিপে নিঃশব্দ মুচকি হাসাহাসির আগাম লক্ষণ দেখে কাঁপছে আমার কলম।
এরচে ভালো আমি আমার দায় চাপিয়ে দেই বিশ্ববিখ্যাত জার্মান বৈজ্ঞানিক অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এর উপর। তিনি বলেছিলেনঃ "লোকে বলে রবীন্দ্রনাথ বড়ো কবি আর আমি বলি তিনি বড়ো বৈজ্ঞানিক"
আইনষ্টাইন  আর ব্যাখ্যা করেননি রবীন্দ্রনাথ কি আবিস্কার করলেন আর কোন বিষয়ের বৈজ্ঞানিক? আসল কথাটিই অজানা রয়ে গেল। শেষমেষ এই  অজানা কথাটিই আজ আমাকে জানাতে হচ্ছে, আর তা হলো রবীন্দ্রনাথ ছিলেন সবচে বড়ো একজন মনোবিজ্ঞানী।

এছাড়া অজানা বিষয় নিয়ে লেখার ব্যাখ্যাটি আমার কাছে অন্যরকম,যেমনঃ কেউ লিখলেন রবীন্দ্রনাথ একজন বড়ো ফুটবল রেফারী ছিলেন? এ বিষয়ে কোনো তথ্য উপাত্ত রবীন্দ্রনাথের জীবনী ঘেঁটে বা কোন বই পুস্তকে রেফারেন্স জার্নালে পাওয়া যাবেনা। তার মানে এটি একটি অজানা রাবীন্দ্রিক বিষয় হতে পারে?
এ ব্যতিরেকে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে যাই লিখুন-বলুন, অন্তত বর্তমান এই যুগের প্রেক্ষাপটে,তা কারো না কারো জানা, এবং কোননা কোন পুস্তকে পত্রিকা পুঁথিতে প্রকাশিত।
এর থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে কেউ দাবী করলেন এটা রবীন্দ্রনাথের অজানা বিষয়? আমি সবিনয়ে প্রশ্ন করলাম আপনি জানলেন কি করে? তিনি বললেন অমুক বইপুস্তক বা পত্রিকায়,অমুক জেনেছেন তমুকের উৎস থেকে?
দেখা গেলো এভাবেই পরস্পরা, সুতরাং এটা তো জানাই হয়েছে পুর্বপুরুষের আমলে সেটা এ আমলে অজানা হবে কেন?
এবার আসি জানা কথায়! রবীন্দ্রনাথের ৬৩ বছর বয়সে ৩৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো রবীন্দ্রনাথের প্রেমে
পড়েছিলেন।
১৯২৪ সালে তাঁদের দেখা হয় বুয়েন্স আয়ার্সে, রবীন্দ্রনাথ চিলির রাষ্ট্রীয় আতিথ্যে সে দেশে যাবার পথে অসুস্থ হয়ে আর্জেন্টাইন হাসপাতালে ভর্তি হলে ভিক্টোরিয়া তাঁর সাথে সাক্ষাত‌ করে কবিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। কবি
২ মাস থাকেন ভিক্টোরিয়ার আতিথ্য ও সংস্পর্শে। এরপর প্রায় সতের বছর বেঁচেছিলেন কবি, এই সতের বছরে আরেকবার ফ্রান্সে তাদের শেষ দেখা হয়।
কিন্তু চিঠি বা প্রেমপত্র আদান-প্রদান হয়েছে বিস্তর, এ নিয়ে অনেকে রসাল গদ্য ফেঁদেছেন, অতএবঃ
"গোপন কথাটি গোপন রইলোনা
অজানা কথাটি হইলো জানা"

সবশেষে, মহান কবিগুরুর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

তারিখঃ বুধবার
১৪ শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।
২৯/০৭/২০২০ ইং।