ছাব্বিশে মার্চ ভোরের হাওয়ায়
খাঁচায় পোষা দোয়েল পাখিটি
উড়িয়ে দিয়ে,বাঙলা মায়ের
খোকনসোনা যুদ্ধে চলে গেলো
তারপর দীর্ঘ ন'মাস যুদ্ধ শেষে
ষোলই ডিসেম্বর বিকেল বেলায়
চার বেহারার পালকী চড়ে
খোকনসোনা বাড়ী ফিরে এলো।
সবুজ চাদরে আবৃত তার দেহ
বুকের মাঝখানে একটি লাল বৃত্ত,
এঁকে দিয়েছে পরাজিত শত্রুর বুলেট।
নিকোনো উঠোনে খোকনের হাতে রোপন করা কাঁঠাল গাছের ছায়ায় রাখা হলো
স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ খোকনের মরদেহ।
জারুলগাছের শাখা থেকে উড়ে এসে
দোয়েল পাখিটি বসে,খাটিয়ায় ঘুমানো খোকনের শিয়রে-শিস দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বলে,
আমায় চিরদিনের জন্য মুক্ত করে দিয়ে
তুমি নিজে আত্মাহুতি দিলে-
তোমার এই আত্মদানের মধ্য দিয়ে
আমি এই স্বাধীন বাংলাদেশের
জাতীয় পাখির মর্যাদায় অধিষ্টান করলাম।
সুন্দরবনের বাঘ লাভ করলো
জাতীয় পশুর রাজকীয় সিংহাসন।
আর পদ্মার রুপালী ইলিশ পেলো জাতীয় মাছের গরিমা।
তোমার বাড়ীর আঙিনায় কাঁঠাল গাছের ফল পেলো জাতীয় ফলের প্রাথমিক সন্মান।
যেই তাল পুকুরের পাড়ে তোমায় সমাধিস্থ করা হবে সেখানে দন্ডায়মান,তালগাছটি পেলো,জাতীয় বৃক্ষের প্রাথমিক মনোনয়ন।
এবং পুকুরে ফুটন্ত শাপলা পেলো জাতীয় ফুলের মহিমা।
সুতরাং তোমার আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি খোকন সোনা।
এই বাংলার মুক্ত আকাশে-মুক্ত ডানা মেলে
আমি উড়াল দিলেই তোমার বীরত্বগাঁথা প্রকাশিত হবে অনন্তকাল,এদেশের অজস্র
পাখির কন্ঠে,তোমার প্রশস্থি গীত হবে। ষোলই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের মর্যাদায় পালিত হবে।
এই বাঙলায় চিরকাল এই দিনে তুমি সহ
তিরিশলক্ষ শহীদের মরনোত্তর সংবর্ধনা হবে।