ধরিত্রীর শেষ আলো চুম্বনে জেনেছি জন্ম আমার জন্মান্ধ
শোণিত পিপাসু সভ্যতার কর্ণকুহরে কান্নার উলুধ্বনি,
ইট-বালু গড়া অট্টালিকার বাহিরে কালের ডিসটেম্পার
অথচ নরম বিছানায় বাঁকানো ঠোঁটের আলিঙ্গনে গলগল করে গিলে খাচ্ছে
রক্ত ক্ষরিত মানুষের লাশ।
জন্মে দেখেছি মায়ের ফ্যাকাসে মুখ- বাবার ক্রোধমাক্ত চোখ।
খুঁজে পাওয়া যায়নি ইমাম, আজান হয়নি;
তারা তখন স্রোতস্বীনির মসৃণ বুকে সভ্যতার পদচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে,
পৃথিবীর শেষ আলোটুকু বিদায়ে আঁধার হাতছানি দিয়ে ডাকছে
নৈঃশব্দের মাজারে মোমবাতি হয়ে জ্বলছে জোনাকি
বাতাসের গোগ্রাসে তুমুল অট্টহাসি উথলে উঠে দীর্ঘ তাল গাছে
নিকট আত্মীয়রা পুরুষাঙ্গ নেড়ে বলে, ও বাঁচবে না;
মায়ের মুখে নতুন আলোর জোয়ার - বাবার নিঃশব্দে বাজারের ব্যাগ হাতে হাটে যাওয়া
অর্থাৎ এক টুকরো কফন হাতে বাড়ি ফেরা।
অতঃপর আর্তনাদের গরল উৎসবে ধ্বনিত হচ্ছে আমার আগমন বার্তা
উঠোনের এক প্রান্তে আমি আকাশের বুকে পা তুলে খেলা করছি টকবগে রোদে।
আমার মাংসপিণ্ড উপেক্ষা করে বাবার চোখে আগ্নেয়গিরি ঝলসে উঠা-
মায়ের ভীতু চোখ খুঁজে ফিরে আমার কান্না;
ভেসে আসছে মৃদু ধ্বনি " হারামজাদি জন্ম দিলি ক্যান"
আজ পৃথিবীর উদয়-অস্ত যেখানে খেলা করে,
আমার জন্মের অব্যক্ত যন্ত্রণায় আমার মা-বাবা যেখানে আর্তনাদ করে উঠে
সেখানেই জেনেছি জন্ম আমার জন্মান্ধ।।
(আমি কবি নই, নিজেকে কবি মনে করিও না । মনেের বারান্দায় যে আবেগ খেলা করে আমি তাকে সাজাই প্রেম দিয়ে, লিখি শব্দের আলপনায়। লেখাটি আমার অতি প্রিয়। আমার এই সৃষ্টিতেই কেবল আমারই হিংসে হ্য়।)