আমাকে আর কিছুই স্পর্শ করে না
কিছুই না কিছুই না কিছুই না।
ইতিহাসের ভেতরে ঢুকে দেখেছি জীবন্ত নৃশংসতা
মৃত্যুর বর্বর উল্লাস, অসহায় মানুষের সীমাহীন ক্রন্দন,
ধ্বংসের ক্রুর খেলা, নগরের পর নগরে রক্তের বন্যা।
প্রাপ্ত ইতিহাসের সমানবয়সী আমি—আমিই ইতিহাস
বেদনার জোয়াল কাঁধে নিয়ে ধরি সুদূরমগ্ন হাল।
সুন্দরতম নারীর দুচোখ, আলুলায়িত ঘন কুন্তল,
সুস্বাদু ফলের শরীর, নিস্তব্ধ রাত, মেদুর করুণ সুর,
কাঠামোর ক্রমাগত ধস-ধ্বংস, বুলেটবিদ্ধ বুক,
হৃদয়-ঋদ্ধ যন্ত্রণা, ফুলের করুণ মৃত্যু, দৃশ্যের নগ্নতা,
কাপুচিনোর স্বাদ, পাহাড়-পর্বত-সমুদ্র-নদী-বৃষ্টি-হাসি
কিছুই স্পর্শ করে না আর আমাকে, কিছুই না কিছুই না।
চারিদিকে সংশয়ের রাত দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হচ্ছে
পাখির বাসায় কারা যেন ঢেলে দিচ্ছে লেলিহান দাবানল।
ভালোবাসা নিজেও ভালোবাসা খুঁজে—আমিও খুঁজেছি
কতদিন নিস্তব্ধ জলের পাশে শাদা শাদা অনেক ঘোড়া
পতনের আগে গতি বাড়ে—পৃথিবীর কোমল বুকে
কতবার ঘুমানোর সাধ নিয়ে ছুটে চলি দুর্ভাগ্যের দিকে।
তবুও বয়ে চলি সীমাহীন পলিমাটি বুকে নিয়ে সম্মুখে
রুদ্ধ এই পথ কিংবা কচুরিপানায় গিয়েছে ভরে সব হৃদয়
তবুও বিশ্বাস রাখি—তুমিও কতরাতে হারিয়েছে বিশ্বাস!
তোমার হৃদয়ে ধুলো আর মরচের ঘ্রাণ—আবেগশূন্য
হৃদয় নিয়ে ঘুরি—তুমি দূরে অঝোরে কাঁদছো—এইসব দৃশ্য
কিংবা কোনো দৃশ্যই আমাকে ব্যথিত করে না
কিছুই স্পর্শ করে না আর আমাকে, কিছুই না কিছুই না।