রোদ্দুরে শুকিয়ে যাবে।
আর যদি বৃষ্টি নামে
অঘ্রানের পড়ন্ত বেলায়,
ধুয়ে যাবে রক্তের সমস্ত দাগ,
বুলেটে ছিটকে পড়া হলুদ মগজ।
মেথর পট্টির মেয়েগুলো কুয়াশার প্রথম সকালে
দৈনন্দিন ঝাড়ু দিয়ে তুলে নেবে ইটের টুকরোগুলো।
বোমার ধাতব কুচি, আইলান্ডের উল্টানো গ্রীল।
পোড়া গাড়ির ভগ্নাংশ
পৌরসভার পোয়াতি ট্রাকে চেপে পৌঁছে যাবে
শহরের প্রান্ত সীমানায়।
প্রেসক্লাবে জুয়োর টেবিলে আবার জমবে ভিড়,
দৈনিক কাগজে ছাপা হবে নৈমিত্তিক শীতের খবর।
বিষন্ন হাসপাতাল থেকে স্বজনের কাঁধে হাত রেখে
বাড়ি ফিরে যাবে অঙ্গহীন কলেজ তরুন।
নিহত শ্রমিকটির বউ
শরীর বেচবে শেষে শরীরের টানে,
হাত ভাঙা টোকায়ের হাতে উঠবে ভিক্ষার থালা,
আর আহত হবার অপূর্ন বাসনা বুকে নিয়ে
ছাউনিতে ঝিমুবে পুলিশ।
চুল ছেঁটে, নোখ কেটে কবিরা বাড়িয়ে দেবে
পরাজিত জিরাফের গলা,
শিল্পীরা আঁকতে বোসে যাবে দুটি সন্তান যথেষ্ট,
গলাবাজ গায়কেরা গেয়ে উঠবে নোতুন বাংলাদেশ..
পাঁচতারায় উথলে উপচে পড়বে
কৌটোবন্দি ভল্লুকের ফেনা।
আবার সচল হবে শোষনের সনাতন চাকা,
সন্তান হারানো জননীর হৃদপিণ্ডে
গুমরে মরবে ঈশানের মেঘ।
শকুন, কুকুর আর শিয়ালের বিমূর্ত উল্লাসে
মুছে যাবে কার্তিকের ঝলসানো দুরন্ত প্রহরগুলো।
যদি না জন্মায় আজ
স্বপ্নবান একটি কুসুম বিশ্বাসের বিপন্ন উঠোনে,
যদি না সঞ্চার হয় অগ্নিগর্ভা এই সময়ের জরায়ুতে
দিন বদলের ভ্রুন।
০৯.০৮.১৩৯৪ মোংলা বন্দর।
("মৌলিক মুখোশ"—সপ্তম কাব্যগ্রন্থ/জীবনদশায় প্রকাশিত সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশ : ১লা ফাল্গুন ১৩৯৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০।)