এটা প্রস্থান নয়, বিচ্ছেদ নয়– শুধু এক শব্দহীন সবল অস্বীকার
পরিকল্পিত প্রত্যাখ্যান, এ-কোন অভিমান নয়– ব্যার্থতা নয়।
বিরহে কাতর হবে, কাতরতা বাড়াবে স্বাধীন স্বদেশ, জানতাম
আমার শূন্য চেয়ারে হাত রেখে তাকাবে রেখে যাওয়া শেষ স্মৃতিচিহ্ন
বকুলের দিকে,
প্রতিদিন ঘরে ফেরার পদশব্দ শুনতে চেয়ে অপেক্ষা সাজাবে ভেতরে,
জানতাম, আমার না-থাকা শরীর করতলে প্রদীপের মতো
জ্বলতে-জ্বলতে জ্বালাবে নদী, পাখি, ফুল সংসারে সাজানো সবুজ–
তবু এ-কোনো প্রস্থান নয়, এ-কোনো বিচ্ছেদ নয়।
এখন যেখানে যতোদূরে থাকি দ্যাখা না হওয়াই ভালো।
তোমার দেয়ালের পলেস্তারে ভেসে উঠুক যৌবন-হন্তা শ্বাপদ
উঠোনে কৃষ্ণচূড়ায় মৌশুমি ফুলের উল্লাস ঝ’রে যাক হলুদ মাটিতে
অথবা আরো কিছু নোতুন বৃক্ষের ছায়ায় ধ্বনিময় হোক জীবন যাপন,
আরো কিছু হোক, আরো বেশি কিছু– পাওয়া বা পতন
তবু দ্যাখা না হওয়াই ভালো।
চ’লে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়– বিচ্ছেদ নয়,
চ’লে যাওয়া মানেই নয় বন্ধন ছিন্ন করা আর্দ্র রজনী।
চ’লে গেলে আমারো অধিক কিছু থেকে যাবে আমার না-থাকা জুড়ে।
১০/০২/১৯৭৬
কাঁঠাল বাগান, ঢাকা।