বনের হরিন নয়, বাঘ নয়, এতো রাতে চৌকিদার চলে।
হোই কে যায়? কে যায়? গঞ্জের বাতাস ফেরে হিম, নিরুত্তর।
কে যায়? কে যাবে আর! দশমির অন্ধকার একা একা যায়,
একা একা চৌকিদার আঁধারের বাঁকে বাঁকে নিজেকে তাড়ায়।
নিজেকেই প্রশ্ন করে কে যায়? কী নাম তোর ? কোথায় থাকিস?
কী তুই পাহারা দিবি, জীবনের কতোটুকু আগলাবি তুই!
ছিঁচকে-সিঁধেল চোর- আর যেই চোর থাকে দিনের আলোয়?
আর যেই চোর থাকে দেহের ভেতর, শরীরের অন্ধকারে?
রাতের আঁধারে খুঁজে তারে তুই পাবি? চৌকিদার, পাবি তারে?
যে-চোর পাহারা দেয়, পাহারার নামে করে ভয়ানক চুরি,
চুরি করে মানুষের ঘিলু-মাংস-রক্ত-হাড় বুকের বাসনা,
তারে পাবি, যে-তোর জীবন থেকে চুরি করে পূর্নিমার রাত?
যে-তোর জীবন থেকে চুরি করে পয়মন্ত দিনের খোয়াব,
যে-তোর শিশুর স্বাস্থ্য, দুধভাত, চুরি করে বোনের সিঁদুর,
তারে পাবি, যে-তোর গতর থেকে খুলে নেয় মানব-শরীর?
কিসের পাহারা তবে? কেন তবে রাত ভর রাতকে তাড়ানো?
অন্ধকার পৃথিবীতে শুধু কিছু তারা জ্বলে, দূরের নক্ষত্র।
ঝিঁঝি ডাকে। পাটের পচানি থেকে গন্ধ আনে রাতের বাতাস।
পুরোনো কবর খুঁড়ে শেয়ালেরা বের করে আধ-পচা লাশ-
হোই কে যায়? কে যায়? পৃথিবীর অন্ধকারে চৌকিদার চলে॥
১১/০২/১৩৮৮
মিঠেখালি, মোংলা।