কুটুম এসেছে ঘরে, সাঁচিপান সাজো বউ রুপোর বাটায়।
চিরে মুড়ি আছে কিছু? নয়তো বাতাসা দাও সাথে নারকেল।
একেবারে খালি মুখ, আর কি সেদিন আছে, আহারে আকাল!
শ্রাবনের বানের নাহান ভেসে গেছে সব-হায়রে সুদিন।

কি সুখে ছিলাম বউ! ভাত মাছ, তরকারি কিসের অভাব?
অতিত্তি বাড়িতে এসে খালি মুখে ফিরে যাবে সে কেমন কথা!
আর কি সেদিন আছে- কতো রাজা বদলায়, দিন তো ফেরে না।
কিছুই মেলে না আর, কেতাবের কলিকাল এরে বুঝি কয়?

ও বউ মাদুর দাও, ছায়ায় বসুক এসে, বাইরে যা খরা-
ছেলেরা সবাই মাঠে, পুকুরে যে জাল ফ্যালে তা-ও কেউ নেই।
দুপুর গড়ায়ে এলো- ও বউ রান্না চড়াও, চাল দাও বেশি,
আর কি সেদিন আছে! কিছুই মেলে না আর, কিছুই মেলে না।

ঝুড়ি ভরা ফলমূল, দুই বেলা দুধ আহা কী শারান্ত গাই,
খাটাশ আটার রুটি কোনদিন ছুঁয়ে কি দেখেছি, কোনদিন?
কতো রাজা বদলায়, দিন বদলের কথা শোনায় ছেলেরা,
দিন তো ফেরে না বউ? বানের জলের মতো ভেসে যায় সব…

পশরের পাড়ে আজো এই দৃশ্য বেঁচে আছে, দৃশ্যের মানুষ।
সব গেছে, আছে শুধু আহলাদটুকু, আছে অতীতের স্মৃতি।
এইসব প্রবীনেরা হারানো দিনের গন্ধ ধ’রে রাখে আজো,
আজো তার স্বাদ পায়, আজো তার স্বাদ চায় বিলাতে অন্যকে॥

১০/০২/১৩৮৮
মিঠেখালি, মোংলা।