এমন ঝড়ের রাতে আচমকা ভেঙে দিলে নায়ের গলুই! আমারে ভাসালে তুমি মাঝগাঙে, দরিয়ার সর্বনাশা জলে, আমারে পোড়ালে রোদে দুর্যোগের অনাবৃত আকাশের তলে।
শিরদাঁড়া ভেঙে আসে, এ পাষান ভার আজ কোনখানে থুই?
এই দগ্ধ মসলিন, এ-ছেঁড়া কাপড় ফের কোন তাঁতে বুনি? মৌশুমি পাখির ঝাঁক ধিরে ধিরে জমা হয় হেমন্তের মাঠে, পচে রস। জিরেন রসের তাড়ি অঘ্রানের অবসাদ কাটে— আমি শুধু অন্ধকারে একা একা দুর্দিনের পদশব্দ শুনি।
এতো যে কষ্টের ধান! মাঠভরা ধানে তুমি নামালে বয়ার, আগুনে পোড়ালে ক্ষেত, পাকা-শস্য, ঘরে দিলে করাল আগুন।
আমার শরীর আর মাথার মগজ জ্বলে, জ্ব’লে উঠে খুন, আমিও ছিঁড়তে পারি এই রুক্ষ বুনো হাতে বেয়ারা আঁধার।
মালশায় পোড়ে তুষ। নবজাতকের কান্না ভেসে আসে দোরে,
বিরান সংসারে জাগে নোতুন মানুষ এক নোতুন খোয়াব, তুমুল চিৎকারে ভাঙে জঙধরা হৃদয়ের নিরীহ স্বভাব। বুকের ভেতর এক তাজা শিশু জন্ম নেয় প্রানবন্ত ভোরে।
আমিও ফিরতে পারি, বানের মতোন পারি ভাসাতে দুকূল,
কেউটে সাপের মতো রুখে পারি ফনা তুলে আমিও দাঁড়াতে,
পারি ভূমিকম্পের মতোন কালো পৃথিবীকে দুহাতে নাড়াতে—
আমিও আনতে পারি সবলে ছিনিয়ে ওই স্বপ্নময় ফুল।
~৩১.০২.১৩৮৮ মিঠেখালি মোংলা।
কাব্যগ্রন্থ : মানুষের মানচিত্র []