যে-পথে ফিরেছে সব, সেই পথে আমার হবে না ফেরা,
ভাঙনের রুগ্ন গান শুনতে শুনতে, বৃষ্টিতে আমুন্ডু ভিজে
           বেহুলার ভাঙা ভেলা ফিরে যাবে জন্মের বিশ্বাসে!

সাথে আমি কী কী নেবো?
বিলাসী নগর থেকে তীক্ষ্ণ রমনীর প্রেম
মদ, মাংশ, কৃত্রিম হাসির ঠোঁট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভালোবাসা?
আমি কী কী নেবো?
ইটের নিসর্গ থেকে জংধরা মানুষের শব, কালো টাকা,
জালিয়াতি, আলুর গুদাম আর এই ন-পুংশক রাজনীতি?

সেলফে বন্দি রবীন্দ্রনাথ, ড্রয়িংরুমে ঝুলে থাকা ধানশীষ
আহা বাংলাদেশ তুমি ঝুলে আছো- আমাদের সোনার বাংলা...
কতিপয় হিজড়া-পন্ডিত আর মূর্খ নেতাদের ডিনার টেবিলে
মুখ থুবড়ে প‘ড়ে আছে বিষন্ন বাংলাদেশ উচ্ছিষ্ট হাড়ের মতো।

আমি জানি এই ঋন আমাকেই শোধ দিতে হবে,
এই ধংশস্তুপ কাঁধে নিয়ে আমাকেই যেতে হবে সহস্র মাইল।

ফিরে যাবো।
যে-পথে সবাই ফেরে, হাসি খুশি মুখে গান, প্রিয়জন সাথে
সেই পথে আমার হবে না ফেরা, সেই পথ আমার হবে না-
রক্ত, ঘাম আর ধংশস্তুপ কাঁধে নিয়ে আমাকে ফিরতে হবে

ট্রেনের জানালা দিয়ে ধানক্ষেত দেখতে দেখতে আমার ফেরা হবে না।
চেঞ্জারে ভাটিয়ালি, লালন শুনতে শুনতে আমার ফেরা হবে না,
বুক ভরা ভালোবাসা মৌন মুগ্ধ গান আমার হবে না ফেরা-

আমাকে ফিরতে হবে ঘাম, রক্ত আর সময়ের ধংশস্তুপ কাঁধে
            শেষতম সৈনিকের মতো একা একা ক্লান্ত ইতিহাস।


০৪/১১/১৯৭৭
সিদ্ধেশ্বরী, ঢাকা।