বিচারের কথা কেউ বলছে না কেন আজো সুতীব্র ভাষায়?
কোথায় লুকোলাে তারা রক্তমাখা হাত নিয়ে কার হেফাজতে?
খুনিরা কোথায়? রাজপথ দেখতে চাইছে নির্মােহ বিচার।
উড়ে এসে জুড়ে বসা একটি দশক ধরে হত্যা নিপীড়ন,
শ্বাসরুদ্ধ, কণ্ঠরুদ্ধ, স্বেচ্ছাচারে কলংকিত পুরােটা সময়-
তসরুপ হরিলুটে যারা ছিলাে ব্যতিব্যস্ত পেয়ারা গােলাম,
ক্ষমতাকে বকলেস আঁটা কুত্তার মতােন পেলে পুষে যারা
এতােদিন কেড়ে খেলাে পুরাে ননিটুকু দুধের পুরােটা সর।
উন্নয়ন রাজনীতি চর্চা কোরে উন্নত করেছে যারা ক্যাশ,
ব্যক্তিগত চেকনাই, লাবন্যশোভন মেদ স্বাস্থ্য সমাচার,
কোথায় তাহারা? জনতা দেখতে চায় এর প্রকাশ্য বিচার।
মায়েদের চোখ ভেজা, এখনাে বােনের মুখে কৃষ্ণপক্ষ রাত,
অনুজের রক্তের ভেতর পুড়ছে এখনাে কোনাে এক লরী,
কোনাে এক শুষ্কহীন শ্রীমতী পাজেরাে জিপ, দীপ্তিময় ক্রলিং।
গাছের খেয়েছে সব, কুড়িয়েছে জেনে শুনে তলার পুরােটা,
মিনারে প্রবল কণ্ঠ, মধ্যরাতে ফিস ফিস প্রাসাদে প্রাসাদে-
পচা গলা ওইসব ফ্যাকাশে বীভৎস মুখ দেখতে চায় না,
রাজপথ এখন দেখতে চায় তরতাজা তুমুল তীক্ষ্ণতা,
রাজপথ বিচার দেখতে চায় সততায় নিকশিত রায়।
এখনাে মায়ের চোখ ভেজা, বােনেরা পাথর আর অনুজের
রক্তের ভেতরে এক কুশপুত্তলিকা পুড়ছে এখনাে, তার
হাত থেকে জনতা নিয়েছে কেড়ে ক্ষমতার আশ্চর্য প্রদীপ।
ইতিহাস বিকৃত করেছে যারা, তারা কই? কোথায় দস্যুরা?
অপরাধীদের জনতা দেখতে চায় কাঠগড়ায় এখন,
বাহাত্তরের সে-ভুল ফের যেন এই দেশে আবার না ঘটে।
~৭ ডিসেম্বর ১৯৯০ রাজাবাজার ঢাকা।
কাব্যগ্রন্থ : একগ্লাস অন্ধকার