পোড়া তুষের গন্ধে একদিন জননীর দেহ
তোলপাড় কোরে ওঠা এতোটুকু ভ্রূন— এতোটুকু বীজ,
আকাংখার অবয়ব নিয়ে রক্তোচ্ছাসে বেরিয়ে এসেছিলাম..
তখন আকাশে শেষ জিজ্ঞাসার মতো বাঁকা চাঁদ
হয়তো ছিলো—হয়তো ছিলো না। পাশের মাঠ থেকে
কালো সব বাতাসের অলস শরীর কেঁপে কেঁপে
শীতের অসুখে ম্লান রোগীদের মতো এসেছিলো,
আঙিনার চারপাশে হয়তো তখনো কুয়াশারা
প্রেম এনে দিতেছিলো রাত জাগা মানুষের মনে।
মা-কেই ঈশ্বর ভেবে হয়তো দারুন প্রতিজ্ঞায়
অবুঝ হাত-পা ছুঁড়ে তীব্র প্রতিশোধ জ্বেলে আমি
তছনছ কোরে ফেলেছিলাম ডেটল-শাদাতুলো
অথবা ধাত্রির শুভ্র ধবলিমা বসন।
মনে নেই—হয়তোবা আমি তার বুকের গম্বুজে
প্রেমিকার ঠোঁট ভেবে প্রথম চুম্বন এঁকেছিলাম।
মনে নেই, মনে নেই—পৃথিবীর জল—ধুলাবালি,
কালোরাত, জননীর রক্তমাখা এটুকু দেহকে
কারা সব কতোটুকু বিস্ময়ে পাহারা দিয়েছিলো!
জন্মের গন্ধের কথা মনে হলে শরীরে তাকাই,
আজো এক ঘ্রান আছে—আজো এক অক্ষম বিক্ষোভ
শোনিতের অভ্যন্তরে, জন্মের প্রথম চিৎকারের মতো
অক্ষম হাত-পা ছুঁড়ে আজো সে তছনছ করে শুধু নিজের বাসনাগুলো,
ডেটলের শিশি—শাদাতুলো—পৃথিবীতে রক্তমাখা করুন কাপড়।।
০৭.০৭.১৯৭৬ মিঠেখালি মোংলা।
কাব্যগ্রন্থ : উপদ্রুত উপকূল (ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)