কবিতা নাকি একটি নির্দিষ্ট গোত্র মেনে চলে! যেমন যে গদ্য কবিতা লেখে তার সাথে গদ্যর সখ্যতা, যে গীতিকবিতা লেখে তার গীতিকারের। কবি কবীর হুমায়ূনের ভাষায় আদতে তা নয়। তিনি কবিদের পাখির সাথে তুলনা করেছেন। সব পাখি নাকি একই সাথে কিচিরমিচির করতে ভালোবাসে। গত ২২ জুন ২০১৮ সে রকম এক কিচিরমিচির আড্ডায় আমরা নবীন আর বিদগ্ধ কবিবর সব একত্রিত হয়েছিলাম। ঈদ পুনর্মিলনী আর কবিতার আসরের সাথে একঝাঁক পাখিরূপ কবিদের মিলন মেলা।
কবি রুনা লায়লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। কবি কবীর হুমায়ূনের সঞ্চালনায় এবং কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের ঐকান্তিকতায় একটি সফল অনুষ্ঠান যে আমরা কবিরাও করতে পারি তার প্রমাণ 'ঈদ পুনর্মিলনী ও কবিতার আসর ২০১৮'। আসর কবি হিসেবে অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হয়ে ছিলেন কবি খলিলুর রহমান। আরো বেশি নস্টালজিক বিষয় ছিল কবি খলিলুর রহমানের কাছের বন্ধুদের স্মৃতিচারণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন কবির বন্ধু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব ড. সুলতান আহমেদ। যিনি নিজেও একজন সাহিত্য বিষয়ক পন্ডিত।
বাংলা কবিতার আসরের সম্ভবত সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলাম আমি। টেনেটুনে চারমাস হলো আমি এখানে লেখালেখি করি। কিন্তু সেটা কেউ বুঝতেই দেয় নি। একান্ত আপনজনের মতই কাছে টেনে নিয়েছে। বাইরে যখন অপেক্ষা করছিলাম কবি সরকার মুনীর নিজ থেকে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো আমি কবিতার আসরে এসেছি কিনা। কেউ কাউকে কোনদিন দেখিনি কিন্তু কথা বলতে গিয়ে সেটা একবারও মনে হলো না। কবি কবীর হুমায়ূন যখন জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করল মনে হলো কতো চেনাজানা। (যদিও উচ্চতার কারনে সামান্য মাইর খায়া গেছিলাম।) ভেতরে ঢুকে কবি গোলাম রহমান, কবি খলিলুর রহমান, কবি সাখাওয়াত হোসেন, কবি হামজা, কবি আরিফ, কবি শব্দ মাধুকরী, কবি খায়রুল প্রমুখ কবিদের সাথে কোলাকুলি ছিল আপ্লুতকর। আরো অনেকেই ছিলেন যদিও সবার নাম আমি এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না বলে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
একজন আসর কবির মতই কবি খলিলুর রহমান পুরো আসর মাতিয়ে রেখেছিলেন। তাঁকে আমার মাটির কাছাকাছি একজন মানুষ মনে হয়েছে। তাই আমি তাকে বলবো 'মাটির কবি'।
উপস্থিত কবিদের কবিতা পাঠ ছিল একটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশনা। যা আমাদের মত কর্মজীবীদের জন্য সোনায় সোহাগা। কারন একসাথে এতজন কবির সান্নিধ্য পাওয়া একটি দূর্লভ ব্যাপার। এই আসরের মূল যে কারিগর তিনি কবি পল্লব। একটি কাঠামো গড়ে তুলেছেন তিনি আর তা বেগবান করছেন কবি কবীর হুমায়ূন আর কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল। ধন্যবাদ আপনাদের এই মহতি উদ্যোগের জন্য।
রুবু মুন্নাফ
২৪-০৬-২০১৮
দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা।