যে আমার ঘর ভেঙ্গেছে,,
সে ঘর ভাঙ্গার আগেই নাকি
অন্য কেউ আমার ঘর ভেঙ্গেছিল।
যে আমার লাইব্রেরীর নব্বই নব্বই পাতা
উড়িয়ে উড়িয়ে আগুন এনে
পুড়িয়ে দিয়েছল বিজয়ের হাসিতে।
তার পুড়ানোর আগেই,,,
কেউ নাকি আমার লাইব্রেরী পুড়িয়ে দিয়েছিল।

আমি উনুনের পাশে বসে
একদিকে পুড়তে থাকা লাকড়ি
আর পশেই পড়ে থাকা লাকড়ি গুলির দিকে
তাকাচ্ছি আর ভাবছি,,
উনুনে ছাই ঢুকাব নাকি লাকড়ি?
কে যেন তখন হোট করে কানের পাশে
বসালো জোরে এক চড়
লাল করে দিয়ে আমার গাল
বলে গেল,,বলেই গেল
ছাই কে আর কে পুড়ায় রে?

ফিরে এলো চৈতন্য আমার
মনে পড়ে গেল ঝড়ের কথা
ওই ত কয়দিন আগে যে ঝড় হয়ে গেল
বিশাপ লণ্ডভণ্ড এর ঝড়।
জানো আমাদের গ্রামে কত পুরুনো ভাঙ্গা বাড়ি পরে আছে
ঝড়ের বাতাস ,,,সেই বাড়িগুলিকে স্পর্শও করে নি।
বরং আমাদের যে নতুন সুন্দর ঘরটা ছিল,,,
সেটাই উড়িয়ে নিয়ে গেল,,
পাশের বাড়ির কাকীমার নতুন টিনের
নতুন গোলা ঘরটা তুলে নিয়ে ফেলে দিল
ওই যে সেখানে গো,,,

যেখানে ভুতের ভয়ে কেউ যায় না,,
গ্রামের ভিতরেই,,অথচ গ্রাম হতে আলাদা
এক ভাঙা রাজ বাড়ি।

ভেঙ্গে গেছে যা,,তা কেউ ভাঙ্গে না
ভাঙ্গে তাকেই,,যাকে ভাঙ্গা উচিত নয়।
আমার এক শিক্ষক আমাকে বলেছিল
আমরা নাকি কোথাও ভেঙ্গে আছি।

আমি বললাম কোথায় স্যার?
কোথায়?

উনি বললেন অন্ধকার যুগে!

আমি বললাম,,আমি অন্ধকার যুগকে
আরো অন্ধকার বানাবো,,আরো ভাঙ্গবো
আমি আমাদের।

উনি বলেছিলেন,,আমি পারব না।
আমি যাই করব,,,তা হয়ে যাবে নতুন কোন অন্ধকার
নতুন কোন ভাঙ্গার গল্প!!!

সেদিন কষ্ট পেয়ে বলেছিলাম,,,
সেই অন্ধকার যুগ টাই যদি বানাতে না পারি ,,
ভাঙ্গতে না পারি সেই সময়ের মত
তাহলে তার বিপরীতে কী হতে পারব বলত?

জীবনের সকল শিক্ষক ওমনি
চলে আসলেন আমার সামনে,,
আমাকে কান ধরে নিয়ে গেলেন,গুরুদুয়ারাতে।
গুরু দুয়ারার দেয়ালে দেয়ালে নানান বীভৎস ছবি
অন্ধকার সময়ের ছবি,,,।
আমাকে সেই ছবি দেখালেন আর বললেন,,
সেই অন্ধকার আর ভাঙ্গার বিপরীতে যা হতে পারবি

তা হল
এক চৈতন্য মহাপ্রভু
আর দুই,গুরু নানক।।

অবাক হয়েছিলাম সেদিন,,মহা অবাক।
কিন্তু আজ ,,আজ যখন চোখের সামনে ভেসে উঠলো
আমার সেই পুড়ে যাওয়া লাইব্রেরীর জীবন্ত ছবি
যখম নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে গেল,,আমার সেই ভাঙ্গা ঘর।
তখন যার ছবি দেখলাম
তাঁকেই মনে হল,,মহা প্রাণ,
সত্যি কোন মহাপ্রাণ,,

তাকে কী নাম দেই বলত?

##########################
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
২২/০৬/২৪