ট্রেনটা ছুটে যাচ্ছে,,,
চারদিকে কত যে ছোট বড় ঘর
কত গাছ পালা,,সবুজ ,হলুদ ঘাস ,,কত কী?
বন জঙ্গলে সাপ,,নদীর সমান্তরাল জল হতে
উঠে আসা কুমির,,
কিছু কিছু জায়গায় আগুন মুখে
দাঁড়িয়ে থাকা কিছু পাখি,,
কোথাও বা বলা নাই কওয়া নাই
হোট করে রোদেল আকাশে বজ্রপাত।
ঠিক এর মাঝ দিয়ে,,
হন হন করে যাচ্ছে ট্রেন,,
জানো বাবা,,ট্রেনটার এত গতি
মনে হচ্ছে আমি বাতাসের বেগে উড়ে যাচ্ছি,,,
পেছন দিকে কে যেন আমাকে ধাক্কাচ্ছে,,,!!
সত্যি বলত বাবা ,,সত্যি কি কেউ আমাকে
পেছন দিকে ধাক্কাচ্ছে,,?
তোমার একটা ছবি,,আমার সাথে
সব সময় থাকে,,,।
আমার হাতের লাল ব্যাগটার ভিতর
ছোট্ট একটা জায়গায়,,সবুজ রুমালে
বাধা থাকে বাবা!
এই ছবিটা আমাকে হতে বের হয়ে
সামনে এসে বল না বা,,,
ধাক্কাচ্ছে কে?
এই দেখ কি যে বলা শুরু করেছি।
বলবই না কেন?
ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখছি
এক বাবা তার কন্যা কে নদীতে নামিয়ে
স্নান করাচ্ছে ,হাসিতে খুশিতে।
এই দেখ দেখ,,কী সুন্দর করে
কন্যাটিকে কাধে করে নিয়ে যাচ্ছে আবার ঘরে।
কী ভালোবাসা দেখ,,,!!
আচ্ছা বাবা তোমরা কন্যাকে এত ভালোবাসা কেন?
কন্যার অন্তরে শুয়ে থাকবে বলে?
আজীবন,,?
না বাবা পারবে না তোমরা,,,!
কা্রো কারো বাবা জীবনটাই কাটাতে পারে না,,
কন্যার সাথে,,,আবার আজীবন!!
তোমরা পারো বাবা!!
তোমরা পারো।যাকগে এই দেখ,,,
মোবাইলের স্কিনটায়
একটা মেয়ের সাঁতার কাটা দেখছি।
জানো কে তাকে শেখাচ্ছে?
বাবা।
একটা কন্যা শিশুর মুখে আবোল তাবোল শুনছি
জানো তাকেও কে শেখাচ্ছে তা?
শিশুটির বাবা,,বাবা।
আরও দেখছি এক বালিকা,,
চায়ের কেটলি হতে ঢেলে নিচ্ছে চা,,পেয়ালায়।
পাশ থেকে সতর্ক চোখে কে দেখছে তা জানো ?
বাবা,,,বালিকাটির বাবা।
গুগুলে সার্চ দিয়ে দেখছি বাবা অযুত ছবি তোমাদের।
এই দেখ না ,ভাইরাল হয়ে একটা ভিডিও
চলে আসলো ফেসবুকের সামনে,,।
না দেখে কী আর পারা যায়?
একটা যুবতী কন্যা যাচ্ছে হেটে কলেজে,,!
ধান ক্ষেতে কাজ করতে করতে,,
মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে কে জানো?
তার বাবা।
যার ঘামের রক্তের ঘ্রান মেয়েটির কলেজের পোশাকে
মেয়েটির পিঠের উপর থলেতে,,
মেয়েটির থলের ভিতর,,প্রত্যেকটি পুস্তকে।
শুধু কী ঘাম বাবা,,
মেয়েটির চোখের উপর যে চশমা,,,
এটাও যে কিনে দেওয়া তার বাবার,কেবল বাবার।
ও বাবা,,ট্রেনে চড়ে চড়ে এখনো কেন
আমি এমন দেখছি,,চারদিকে কিবা হাতের মুঠোতে?
আমি কেন দেখব বল এমন?
আমার বাবাত নেই আমার কাছে!!
নাকি আছ বাবা ,,সত্যি আমার কাছে।
তাহলে আস বাবা ,,সামনে আসো
একবার এসে দাঁড়াও সম্মুখে,,।
আমার আঁচল টা এখন একটু বড় হয়েছে বাবা,,
তোমার সেই ছোট্ট খুকী আমি আর নই,,
এখন আমি চেয়ারে বসে চেয়ারকে বানাতে পারি চেয়ার,,
হেটে হেটে পথকে দিতে পারি পথের পরিচয়,,
এখন আমি তোমার বানানো বাগানে
বাগানের চাওয়ায় করতে পারি
মালির কাজ!
তোমার শুরু করা চিত্রপঠে আঁকতে পারি ছবি
যা তুমি চেয়েছিলে আঁকতে।
অনেক কিছু এঁকেছিও বাবা,,!
আরো কিছু আছে বাকী!!
সেগুলিও একদিন আঁকব,,হ্যা হ্যা নিশ্চয়ই আঁকব।
তবে তুমি কী একটু সামনে এসে বসবে বাবা,,?
আমি তোমার কপালের উপর ঘাম,,
আমার আঁচল দিয়ে মুছে দিব?
তোমাকে এক বেলা মুখে তুলে খাওয়াব,,।
সত্য বলছি বাবা,,কোনদিন ভাববও না
কেন তুমি থাকো শুধু জেলে জেলে,হাজত বাসে!
কেন তুমি করো এত মিছিল,,বারে বারে?
কেন দাও এত বক্তৃতা,,বজ্রস্বরে।
কেন দাঁড়ায় মৃত্যুর সম্মুখে,,এমন করে?
শুধু আদর করে ,,,আমার কপালে
একটা,,হ্যা কেবল একটা চুমু দিও এঁকে বাবা।
চুমু দিও এঁকে।
আমি যে তোমার চিত্রপটে
আমার আঁকা ট্রেনটি
নামিয়ে দিয়েছি এই শহর জুড়ে।
হন হন করে চলছে ট্রেন,
বিদ্যুতের তারে চলছে ট্রেন,।
কেউ বলে মেট্রো,,কেউ বলে তারে উড়াল,,
আমি বলি,,এ ট্রেন নয়,,
এ স্বপ্ন।এ সাহস।এ বিজয়।
এ কন্যার হস্তে পিতার পদ চিহ্ন।
তাইত দেখোনা বাবা
সবাই দেখছে আমি বসে আছি হেথায়,,।
তাই হাজার সাংবাদিক,,,নিয়ে এসেছে কোটি মাইক
কোটি প্রশ্নের কোটি আবেদনে!!
বল বাবা আমি কী বলি তাদের এমন ক্ষনে।
এখানে আমি যে নেই বসা বাবা,,
আমি নই বসা এখানে।
ওরা জানে না বাবা,,জানে না
তুমি যে বসে আছ,,
আমার মাঝে,,আমার আসনে।
চলন্ত ট্রেনটাকে তুমি তা জানিয়ে দিও বাবা
জানিয়ে দিও সকল সাংবাদিক প্রাণে কিবা মনে।
জানাবেত বাবা,,এ সংবাদ,,এই উড়ন্ত ট্রেনে?