অন্তরে অগ্নিগিরি তবু মুখে ফুলের হাসি
নয়নে মেঘমালা কিন্তু কথায় মুক্তা ঝরে,
তোমাকে মনে হয়েছিল পুস্পিত যৌবনা উদাসী-
উল্কা গতিতে এসে ব’সেছিলে আমার সত্বা জুড়ে!
বুঝি নি কি ক’রে তোমায় জানাবো স্বাগতম
কি ক’রে কি দিয়ে করবো বরণ তোমায়-
বুঝে ওঠার আগেই দেখতে পেলাম ঘনিষ্ঠতম-
সমাসীন জাগ্রত তুমি এ হৃদয়ের গোপন আঙিনায়।
ক্ষত-বিক্ষত জীবনে পাড়ি দিয়ে রক্ত-নদী-
জীবন্ত দাঁড়ালে যেন ফুলশোভিত শহীদ-মিনার,
ভালবাসার ফুটন্ত অর্ঘ্যে ভরিয়েছি তোমার বেদী
জীবন-মথিত শুভ্র-শিশিরে সিক্ত করেছি সর্বাঙ্গ তোমার।
বলেছিলে একদিন পোড়ো প্রাসাদের মাধবী-ছায়ায়ঃ
মানুষের জীবন ঐ ফুল ও লতার মত থাকে সজীব ও সতেজ
কিন্তু বিধ্বস্ত প্রাসাদের মতই তা মিশে যাবে অন্তীম-ঠিকানায়
আমাদের জীবনটাও প্রশ্নবিদ্ধ হারাবে সেদিন রোমান্টিক আমেজ।
আজো পান্ডুলিপি নিয়ে টেবিলে ব’সেই যেন দেখি-
ফুলদানীতে নিয়মিত রাখা তোমার সেই ফুলগুলা,
আজো হাতের রাখীতে কাকলী ছড়িয়ে যায় সন্ধ্যের পাখী
আজো প্রেমাবেশে উড়ায় তোমার বেনীর শিল্পী দোলা!
প্রতি বছর এই দিনে তোমার অগ্নিগিরির আগ্নেয়তা বুঝি
তোমার কথা ও হাসি ডেকে আনে চোখের বজ্রজ্বালা,
প্রতি বছর এই দিনে বিরহের বহ্নিপাতে সর্বত্র তোমাকেই খুঁজি-
আর রাজবাড়ীর ভাঙ্গাঘাটে ভাসিয়ে দিই অতৃপ্ত কিংসুক-মালা!