-কতটা সত্য এই বেঁচে থাকা?
খাচ্ছি,পরছি,পড়ছি,করছি বড্ড কাজ!
এতেই কেটে গেল কতশত কাল।
খুব কি করেছি কাজের কাজ?
আচ্ছা,খেয়েদেয়ে দুচারটা শ্বাস নেয়াটাই কি তবে বেঁচে থাকা?
-না!তা কেনো হবে?
উপরে তাকাও,কত লোকে বাঁচে!
গাড়ি নিয়ে ঘুরে,বড় বাড়ি থাকে!
কত দামী পরেছে,
কত বিজ্ঞান জেনেছে,
শীত-গরমে কি তারা কষ্ট করেছে?
তারা তো দামী খেয়ে,
বুক সটান করে,থপথপ করে চলেছে।
তারাই তো বেঁচে আছে বাপু!
বেঁচে থাকা তো তারেই বলে।
-আচ্ছা! তবে কি তারা মরে না?
তারা বাঁচেই?
তাদের শ্বাস চলে দুচারের ঢের বেশি?
তাদের শরীরটাকি শরীরই থাকে?
পচে যায় না? গলে গিয়ে গন্ধ হয় না?
-আরে না,না! তা কেনো হবে?
মরে তো সকলেই!পচে তো সকলেই! গলে গিয়ে মিশে যায় মাটিতেই।
-তাহলে?
কি এমন বেঁচে থাকা?
-আরে সে তো বকছে ভুল,ভাবছে ব্যাকুল।
বেঁচে থাকা তো ধরণীর মাঝে,
সবুজকে চিনে,নীলকে জেনে,না দেখা বেরঙা বাতাসকে অনুভব করে।
বেড়িয়ে যাও পৃথিবীকে চিনতে,
তবেই বুঝবে কতটা ভুল জানতে,
বেঁচে থাকা তো ভালোবেসে এই ধরণীগর্ভে।
-ওহ! তাহলেই বেঁচে থাকবো?
ঠিকইতো বলেছে!
ধরণীকেই কেবল ভালোবাসলে ধরণীও বাসবে আমায় ভালো,
নিবেনা আমার শ্বাসটুকু কেড়ে, দিবেনা এই শরীরকে গলিয়ে-পচিয়ে, গন্ধ করে।
তাই না?
-আরে না রে পাগল!
বেঁচে থাকে সকলেই,পচেও যায় সকলেই।
-তবে কিসের জন্য বেঁচে থাকা?
তুমি যে বলেছো, দামী পরে,ভালো খেয়ে, যে বেঁচেছে সেই বেঁচে আছে!
তবু যে সে মরেছে?পচেছে,গলেছেও? শেষ হয়েছে অস্তিত্ব তারও!
আবার তুমি! বললে ধরণীকে ভালোবাসলে বাঁচা যায়,
তবুও যে ধরণী আবারো গিলে ফেলে?
কেনো বাঁচা? কি বাঁচা হলো তবে? মরণের পর কবরে কি করে আলো হবে?
-ওহে! অতো ভাবতে নেই,জ্ঞান কি অতো আছে মানুষের।
-তবে কার আছে এতো জ্ঞান যে করেছে সব?
কার হাতে গড়া এই ধরণী সব?
আচ্ছা,কে তবে দিয়েছে মাটির শরীরে প্রাণ?
কে তবে এঁকেছে এই নীল,সবুজ,আর দিয়েছে বাতাসের ঘ্রাণ?
আচ্ছা কে দিচ্ছে মন? তাতেও দিয়েছে আবার ভালোবাসা অতল?
কার জন্য চলছে সব কতটা নিয়মে?
কে বাঁচিয়েও রাখে আবার গিলেও ফেলে?
তাঁরেই কি তবে ভালোবাসা যায় না?
-সেতো সৃষ্টিকর্তা!মহান আল্লাহতালা!  তাঁকে তো ভালোবাসতেই হবে!  
-তবে যে কত পুঁথি শুনিয়েছ এতটা সময় ধরে?
-ওহে,আমি কি কিছু বলব তোমাদের?একটু কি সময় হবে?
হয়তো মোচন হবে উন্মাদ মনের উন্মাদনার,হয়তো অশান্ত মনের শান্তিও দেখা দিবে!
এই বেঁচে থাকাটা কতটা সত্যি, তা হয়তো জেনে যাবে।
যে সৃষ্টিকর্তা,ধরণী,গ্রহ, নক্ষত্র, আরো যা জানি না আমরা তারও মালিক তাঁকে ভালোবেসে করেছো কিছু?
তার দেয়া প্রাণ নিয়ে শুকরিয়া জানিয়েছ তাঁকে?
সে তো কতটা জ্ঞানী,সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী,
তার বলা পথে রয়েছে বেঁচে থাকার সহজ উপায়,
তাও কি চলছি আমরা তার বলা পথে?
কি করেছি তার জন্য?
কত সম্মান,কতটা ভয় করি কাজের বিনিময়ে দুটাকা দেয়া সেই মহাজনকে!
অথচ যে দিয়েছে সবটা,তাঁরে কি করছি একটু ভয়?
জ্ঞানী লোকের কথার কতটা কদর করো ,
কিন্তু যে সব জ্ঞানীর সৃষ্টিকারী তার কথা কি মানো?
"বলছি শুনো,একটু জেনো, যার এই পৃথিবী,যার কাছে যাবে  মরণের পর,তাঁকে করো একটু ভয়,
ভালোবাসো তাঁকেই, চলো সেই পথে,যে পথটা দেখিয়েছেন তিনিই!
তবে বেঁচে যাবে এই পৃথিবীতে,মরণে যাবে না গলে,গন্ধ হবে না লাশে, বেশ থাকবে অন্ধকার কবরে।"