এত বোঝা আসলে কিছুই মনে হয়না
বাবুদের দামি সব সামান, আমি হাঁটতে পারি সব নিয়ে,
যেমন পিঁপড়ে হাঁটে ।
হোঁচট খাইনা,আগে খেতাম..সব খেতাম,
আধখানা বিস্কুট,পড়ে থাকা ঠোঙা চাটতাম,
না পেলে হাওয়া, খিস্তিও পুরেছি পেটে,
আমি মানিয়ে নিয়েছি ... ।
বাপটারে আমি খেয়েছি লোকে বলে,
মা বলে-বাবা'ই নাকি আমায়,এখন সব মানিয়ে নিয়েছি,
তখন ভিক্ষে জুটতনা...
বর্ষাতে ঘা হয়েছিল দগদগে...বাবা ভালো হতে দেয়নি,
ওতে নাকি টাকা বেশি মেলে ।
তবুও বাবা নেশা ভাঙ করেছে
ধরেছে মেরেছে প্রতিদিন,
আমি পালিয়ে গেছি বহুবার ।
গরম ভাতের গন্ধ আমায় খুব টানে,
সেদিন টেনে একটা ধাবায় নিয়ে গেল,
গন্ধে পেট চনমন করছিল..গরম ভাতের প্লেট নিয়ে দৌড়েছিলেম-
নিজের জন্য,আমার মায়ের জন্য,
বোন খেতে পায়নি, কেড়ে নিয়ে বাবা খেয়েছিল ।
ট্রেনে ভিক্ষে করার সময়,বাবাকে দিই ঠেলে..
ওপরে যাবেনা জানি,নিচে..মুখ থুবড়ে পড়ে...
আরো নিচে নরকে গিয়ে আমায় গাল দিয়েছে ।
তারপর বোনটাকে তুলে নিয়ে গেছে ওরা
আর ফেরেনি ।
কেঁদে কেঁদে মাও আঁধারে গেল মিশে,
তারপর আমি একা,যে একায় কোকিল ঘর বাঁধে না
সে একায় আমি একা ।
স্টেশনে কাজ করি,মুটে হয়ে,কুলি হয়ে
কত বোঝা কাঁধে তুলি ...
আর কষ্ট হয়না, সব ঝরে গেছে ঘাম হয়ে ।
কত ছোট ছোট মেয়ে...বোনের মত
ছোট ছোট হাত , ছোট ছোট পা,পিট পিটে চোখ
তারা দাদা বলে ডাকে না,তখন মাকে মনে পড়ে ।
চোখ ঝেপে জল আসে,বাঁধ ভাঙা বান জল ,
তাতে কত জীবন, কত স্বপ্ন ভেসে যায়
শুধু যেতে যেতে .....
বেঁচে থাকার জমিতে পলি রেখে যায় ।