নারী, কে বলে সে পিছিয়ে আছে?
একবিংশ শতাব্দীতে এসে;
পুরুষের সাথে পায়ে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে হাঁটে।
নারী, কে বলে সে পিছিয়ে আছে?
পর্দার বেড়াজাল ভেঙ্গে,
উচ্চ শিক্ষার পথে-
বহুদূর গেছে সে হেঁটে।
নারীরা এখন শুধু ঘর আগলায় না।
আগলায় অফিস, করে শিক্ষকতা।
কেউবা ডাক্তার, আবার কেউ উকিল।
পুরুষের সকল বিচরণ ক্ষেত্রে,
তার সরব পদচারণ।
পাহাড়ের চুড়া, মহাকাশ
কোন ক্ষেত্রে নারী নেই।
তবুও এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে,
গায়ের রং কালো বলে,
মা কালীর পরম ভক্ত মানুষটিও
কালো মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না।
এখনো মেয়ে দেখতে গিয়ে বলে,
তোমার পা একটু দেখি, একটু হেটে দেখাও তো।
গাইতে পারো, রাঁধতে পারো।
যেন মেয়ে নয়,
বাজারে পণ্য কিনতে আসা,
নয়তো বলির পাঁঠা কেনা।
কোন খুঁত মেয়ের থাকতেই পারবে না;
হোক সে ছেলে কানা, ল্যাংড়া বা বোবা।
হোক না সে মেয়ে উচ্চশিক্ষিত,
তবু তো নারী,
রং টা যে বেজায় চাপা।
কর্ম ক্ষেত্রে নারীরা নেই তো পিছিয়ে।
পুরুষ সহকর্মীরা বলে,
মুখে রং মেখে বসের সাথে
একটু হাসি তামাশা করলেই নাকি-
উন্নতির এভারেস্টে চড়া যায়।
নারীরা আজ পিছিয়ে নেই,
তাই বলে তাদের বন্ধু থাকবে, সেটা কেমন কথা।
কলেজ ভার্সিটিতে ছেলে বন্ধু বেশি থাকলেই শুনতে হয়,
চরিত্র খারাপ।
রাত হয়ে গেলে বাসায় ফিরতে নারীরা এখনো ভয়ে থাকে।
বাসায় বাবা কি বলবে, মা কি বলবে, বড় ভাই কি বলবে।
আর রাস্তার মোড়ের বখাটে ছেলেগুলোর কথা বাদ ই দিলাম।
ওরা উত্যক্ত করুক।
ওটাই ওদের পুরুষত্ব।
প্রতিবাদ করলে শুনতে হবে হাজার কথা,
নিজের লোকেদের কাছেই দিতে হবে হাজারো ব্যাখ্যা।
সেই বখাটে ছেলের কু-প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার পুরস্কার তো আছেই।
এসিডে ঝলসানো মুখ।
না হয় একরাতের জন্য সেই কুকুরদের ভোগ-বাসনা মিটানো।
নারী, কে বলে সে পিছিয়ে আছে?
নিষ্পাপ ফুটফুটে কচি বাচ্চা মেয়েটিকে দেখে,
যেসব জানোয়ারদের লিঙ্গ জাগে,
তাদের সেই সভ্য সমাজে নারীরা কি করে পিছিয়ে থাকতে পারে?
আজ সেই নারী অন্য কারোর মেয়ে,
অন্য কারোর বোন,
অন্য কারোর স্ত্রী,
অন্য কারোর মা।
তাদের সাথে অন্যায়ে আমাদের কি আসে?
চুপ থাকাই শ্রেয়।
কি দরকার যেচে ঝামেলায় যাওয়ার?
কিন্তু,
কিন্তু,
কিন্তু
সেই অন্য কারো বোন, স্ত্রী, মা বা মেয়ে-
কাল যে আমার পরিবারের হবে না,
কে দিবে এই নিশ্চয়তা।
থাক জেগে ওঠার দরকার নেই।
দরকার নেই ঝাঁসির রানীর,
দরকার নেই দেবী চৌধুরানীর,
বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল।
এই পোড়া সমাজে নারীরা নারী হয়েই থাকবে।
একটিবার ভেবে দেখবেন কিন্তু।