অনল চলে গেল সে অনেক দিন হয়ে গেল
আর ফিরে এলোনা।
এলাকায় অনলের নাম মাত্র নেই।
এদিকে সোহাগীর সখিরা সোহাগীকে বলে,
“শোনলো সখী,বণ্য মহিষ কখনো পোষ মানেনা;
অনল আর কোনোদিনও ফিরে আসবেনা।
কিন্তু সোহাগী আশায় বুক বেঁধে আছে
অনল আসবে,
এক দিন আসবেই অনল।
১৯৭১ সাল,
হানাদার বাহিনী ঢুকে পড়েছে এলাকায়
ঘড়ের ভিতরে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে
সোহাগী ও তার মা।
সিথানে পিদীমের আলো,
চারোদিকে গোলাগুলির বিকট শব্দ,
আর বুঝি রকষা নেই।
হঠাৎ করে ঘরের নারিকেলের পাতার বেঁড়াটা খসে পড়লো।
সোহাগী ভয়ে দু’চোখ চেপে ধরে
হাউমাউ করে চিৎকার করে উঠলো।
হঠাৎ কি যেন শব্দে...
সোহাগী চোখ খুললো।
চোখ খুলে দেখল...
সে অনলের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
অনল বলল,“সোহাগী আমি অনল”।
সোহাগী বললো,“অনল তুমি এসেছো?”
কত..দিন ধরে তোমার প্রতিক্ষায় আছি তুমি আসবে,
আমাকে বুকে টেনে নিবে।
অনল দাত খিচিয়ে বলতে লাগলো...
সোহাগী, তুই মুক্তিযোদ্ধার বৌ,
তোর এতো ভয় কেনরে?
তোর বুক থাকবে প্রসস্থ,
চোখ থাকবে অক্ষয়,
তোর চোখে পানি কেনরে?
সোহাগী বললাে,“বিশ্বাস করো, আমি মনে করেছিলাম;
বুঝি হানাদার বাহিনী ঢুকে পড়েছে।
অনল সোহাগীকে ছেড়ে দিয়ে পিছু সরে গেল।
সোহাগী বললো,“ কই যাও? দাড়াঁও।”
অনল বললো,“আমার সময় নেই,আমি চললাম।”
তোমার ভয়কে খতম না করে
আমি আর তোমার কাছে আসবোনা।
অনল সেই যে চলে গেল, আর এলোনা।
জগতের কাছে বলে যেতে পারলোনা যে সে নির্দেোষ,
তার কোন দোষ ছিলোনা।
তার দু’চোখে ছিলো শুধু প্রতিবাদের আগুন।
সে শুধু রেখে গেলো জগতের কাছে একটি লাল চিঠি।
১৯৮২ সালের,১৬ই ডিসেম্বর...
সোহাগী সাদা শাড়িতে দাড়িঁয়ে আছে স্মৃতিসৗধের সামনে,
এক গোছা ফুল হাতে নিয়ে।
দু’চোখ অশ্রুর বণ্যায় ভেসে গেলো তার।
আজো যেন তার কানে ভেসে আসে,
“সোহাগী তুই মুক্তি যোদ্ধার বৌ, তুব মুক্তিযোদ্ধার বৌ,
তুই মুক্তিযোদ্ধার বৌ।