আঁধারের মোড়কে ঢাকা আনন্দ নগরি
উপরে বিকৃত উল্লাস, ভিতরে বেদনার
অন্তর্বাহী স্রোত -
দিন-রাত্রি ঘৃণিত অন্ধকার।
দিনের চেয়ে রাত্রির অন্ধকার আরো বেশি গভীর,
আঁধারের যৌবনে আরো বেশি রং ধরে।
পরিস্থিতির বিদঘুটে বিরুদ্ধতা, ঘৃণ্য প্রতারণা,
অসহায়ত্ব, বেচাকেনা -বিচিত্র পথে,
বিচিত্র যানে চড়ে এখানে ভীড়েছে পাপগুলো,এরা আলাদা কোনো জাত নয়, নিষ্পাপ হয়েই জন্মে ছিল এরা।
এখানকার মাটিতে, আনাচেকানাচে, অশৌচ শয়নে
পশুত্বের লাঙলে নরম দেহ চিড়ে পাপের চাষ হয়
প্রতিনিয়ত।
এখানে সবাই ভালোবাসা আর সুখ কেনে
যন্ত্রণার কড়িতে,দেহের শপিংমলে,
দেহ-মনের আগুন নেভাতে আসে শীতল জলে,
মনের অপবিত্রতা আর কলংকের অমোচনীয় দাগ
লাগিয়ে দিয়ে যায় দেহে-
মহা পবিত্র আর কলংকহীন হয়ে ফিররে যায় লোকালয়ে।
মেঘের কান্না, পাহাড়ের কান্না, চাঁদের হাসি,
সাগরের ঢেউ, সবাই দেখে মুগ্ধ চোখে,
প্রতিনিয়ত বয়ে চলা কান্নার অন্তর্লীন স্রোত
কেউ দেখে না-
অদৃশ্য মেঘ হতে অদৃশ্যে বৃষ্টি ঝরে সারাক্ষণ।
এখানে সারা জীবন সবাই দক্ষ অভিনেত্রী,
মনের উনুনে জ্বলন্ত অগ্নি,হাসির ঢাকনায়
ঢেকে রাখি-যেমন বুকে আগুন নিয়ে সূর্য হাসে,
অভিনয় করি ভালো থাকার,সুখে থাকার,
দেহের সুখ বিলানো প্রেমিকার মত,ঘরণীর মত।
হাত পাতলে অনুগ্রহ-অবলম্বনের থলে শূন্যতায়
বাজে ঝনঝন করে-দেহ পেতে দিলে জোটে কিঞ্চিত ক্ষণিকের-তাও আবার নির্লজ্জ ভাগ-বাটোয়ারা।
যন্ত্রণার ধারালো দন্তের জোড়ালো চর্বণ,
আর ধর্ষণে ধর্ষণে বিধ্বস্ত, মুমূর্ষু হই প্রতিনিয়ত,
মৃত্যুকে করি আলিঙ্গন, আবার জেগে উঠি,
মৃত আত্মার জীবন্ত কংকাল বয়ে বেড়াই।
মর্মন্তুদ মৃত্যু, শেষ মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করি-
যখন যৌবনের সৌরভ, নির্যাস সুধা শুকিয়ে যায়,
মৌহীন শুষ্ক ঝরা ফুলের মত,
তখন হয়ে পড়ি অস্পৃশ্য, অপাংক্তেয়, অশৌচ,
নিক্ষিপ্ত টয়লেট পেপার।
চরম অসহায়,অনুগ্রহহীন,জঞ্জাল, কষ্টের মূর্ত মলিন প্রতীক।
করুণ মৃত্যুর পরেও কখনও কখনও ছদ্মবেশী
ভদ্রজনেরা, স্পর্শ করতে দেয় না মাটি,মৃত দেহকে।
বৃথা সব যৌবনের অসহায় বলিদান, অকাতরে বিলিয়ে দেয়া সুখ,উচ্ছ্বাস, ভালোবাসা।