১১

ত্রিবৃত্ত বড় মজার ছন্দ, প্রবর্তক মজনুআহাদী স্যার,
আমিও তাই নিয়েছি তালিম, ভুল হয় বারবার,
বেশ কঠিন মজাও আছে, ত্রি-ছন্দ জানলে সহজ হয়,
স্যার খুব ভালো মানুষ, উনাকে জানাই আদাব আমার।

                                   ১২

তোমরা যারা কামক্ষুধা বলো, আমি তা মিথ্যা বলি,
শারীরিক উপভোগ করে কি হবে? যদি না স্রষ্টার পথে চলি,
ধরায় এসেছি পুণ্য করতে, তাঁর নাম যেন ডাকি,
সন্ন্যাসী হও মনের সাথে,তবে চাঁদ হাসবে ঝলমলি।

                                      ১৩

তোমরা দেখছি মদ বলো, আমি বলি তারে সুরা,
দেখিনি তা করে পান, শরাব পাত্র থাকে ভরা,
সুরার ভাই একি গুণ,পান করলে মাতাল করে,
এই সুরা নয় রে ভাই, প্রেমের সুরায় জগৎ পুরা!

                                      ১৪

বহিঃরঙ্গে ধরেছো সাধুর বেশ, অন্তর তোর ময়লায় জমা,
পার পাবি না শেষের দিনে, বিধাতা তোরে করবে না ক্ষমা,
ডাকো শুধু আল্লাহ,হরি, লোক দেখনো হাসির ছল,
পরনে পাঞ্জাবী,গেরুয়া বস্ত্র, আরো কত রয়েছে তোমা।

                                   ১৫

এক কুম্ভকার গড়ল মূর্তি, দেখি আজব কারখানা,
কথা বলে, প্রেম করে, উদ্দেশ্য আজও হয়নি জানা,
কুম্ভকারে সুধালাম মৃদু স্বরে, একি তোমার কারসাজি?
বলল হেসে বুঝবে শেষে, যখন দিবে যমে হানা।

                                     ১৬

সুরার পাত্র এগিয়ে দিয়ে, বলল আমায় খেয়ে নাও,
ভাবলাম মনে দেবতা নিশ্চয়, আমি বললাম হাতে দাও,
সুরা পানের পরেই দেখি, স্বর্গালয়ে এসে গেছি!
নর্তকী নাচে নৃত্যের তালে, কেউ বলল বসে যাও।

                                      ১৭

গভীর জলে লুকিয়েছে সাধন তত্ত্বের মূল কথা,
উপর থেকে যায় নাতো, দেবী গঙ্গা থাকে সেথা।
পূজা করো, নামাজ পড়ো, সব কাজে জলের বিধান,
দেহমন ও সৃষ্টি শুদ্ধ, জেনো রহে একই গুণ যথাতথা।

                                   ১৮

দক্ষ কারিগর গড়েছেন এই দেহ, কত কলকব্জা দিয়ে,
ছয় জনে চালায় দেহ তরী, শত শত ঝুঁকি নিয়ে,
পঞ্চ উপাদান আছে দেহের মাঝে, তত্ব গুরু তাই বলে,
চর্ম বসনে ঢেকেছেন কর্তা মোদের, সময় কাটে সাধন নিয়ে।

                                   ১৯

আমি যোগাসনে বসে ভাবি, আমার মাঝে আছেন তিনি,
প্রেম দিয়ে ডাকি তাঁরে, আমায় সৃষ্টি করেছেন যিনি,
পাপ, পুণ্য ধরায় আছে, কি করবো ভেবে না পাই!
চক্ষে যারে দেখিনি আজও, সৃষ্টি লোকের কর্তা তিনি।

                                      ২০

কত আদর যত্নে পুষিলাম তারে, শেষে বিষাক্ত ছোবল মারল বুকে,
আগে জানতাম যদি প্রিয়ার রূপ, আমি নিজেই দিতাম প্রেম চুকে,
এই ভাবের দুনিয়ার মিছে খেলা, এতো ডাকি তবু বুঝলো না আমায়,
সাঙ্গ হলো আজ প্রেমের হাট, নিথর দেহে মরি ধুঁকে ধুঁকে!