বিজয় দেখিনি; বিজয়ের কথা শুনেছি মাত্র
বাপ দাদারা এত সাহসী ছিল না যে, যুদ্ধের নায়ক হয়ে উঠবে
বুকে রক্তের বান ডেকে, শত্রুর রক্তচক্ষুকে অবহেলা করে,
বন্দুক হাতে তুলে নেবে।
আমি সাধারন যে কোন বাপ দাদাদের কথা বলছি
তাদের মুখের কথা বলছি
বিজয়ের পূর্বে শকুনের ছায়া ও ছোবলের কথা বলছি
পত্র পত্রিকা, সাময়িকি, ম্যাগাজিন, গল্প, উপন্যাসে
বিজয়ের কথা পড়েছি কেবল, উদযাপনের চিত্র অবলোকন করেছি,
বড় বড় লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, অনুগল্প লেখিয়েদের
কল্পনায়, তৃতীয় চক্ষু ভর করে ঘুরে এসেছি বিজয়ে
তাকে স্বচক্ষে দেখব এমন সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি
বিজয়ের কথা পড়েছি মাত্র, বিজয় দেখিনি
বিজয় নামে কোন বন্ধুও ছিল না আমার কোন কালে
থাকলে চোখে পড়তই, কারন দেখতে চেয়েছি
বিজয়কে, তো দেখব না কেন?
অবশ্য, বিজয়কে দেখার থেকে না দেখার সুবিধাই অনেক
তাকে না দেখার সুবিধা আছে তো! জানেন?
সুবিধা হল এই যে, বিজয়ের কাল মুখ আমার দেখতে হয় না
সারা বছর ইংরেজির অলিগলি ঘুরে ক্লান্ত হয়ে
বিজয়ের দিনে বাঙ্গালি হলে তো তার মুখ কালো হবেই
তার কালো মুখ দেখতে লজ্জা লাগে
তাই বিজয়ের কথা লিখেছি মাত্র
তাকে দেখতে ইচ্ছা হয়...
মানুষের সব ইচ্ছা বিজয়ের কাছে জমা থাকে
প্রত্যেক বছর তা শুধু ভারি হতে থাকে
এমন করে সাজাও, অমন করে বাজাও
বিজয়ের গায়ে আরো দুটো প্রলেপ লাগাও
আলোচনা চলুক বেশি করে, দু'একটা চ্যানেল না করলে
ওরা রাজাকার হয়ে ওঠে, লজ্জার মাথা খায়
বিজয়ের বেশভূষায় দু'টো ভাঁজ বেশি পড়ে গেল যে, তা থাক থাক রেখে দাও
তেতাল্লিশ বছরে এরকম করে কম ভাঁজ জমা হয়নি
বিজয়ের কথা শুনেছি মাত্র
বিজয় হয়ে উঠিনি