বাবা, তোমাকে দেখতে হবে বলে একদিন
ফিরিয়ে নিয়েছিলাম দৃষ্টি, দুহাতে ঢেকেছিলাম চোখ
অনভ্যস্ততায় বুঝতাম না, জীবনের সত্য খুব কঠিন
দূর থেকে রাজার ভগ্ন বাড়ির ফটক ভূতুড়ে দেখায়
এমন সত্য বুঝিয়ে দেবে, ছিল না কেউ তেমন
শ্বাপদের কোন দূগর্ন্ধ থাকে না, চাপা থাকে চামড়ায়
চামড়ার আড়ালে পচে গলে পোকায় খেয়েছে যে মাংস
তা চিনব তার উপায় কই? শেখানোর মানুষটা তো
রাজ বাড়ির শূন্য বাতাসে ঘুমরে কাঁদা কামরার অংশ
কেউ বলেনি রাজ বাড়ির মধ্যমুকুট, চূড়ামনি
না থাকলে ফটকতো ভগ্নই থাকে,
চলে যায় আগাছার দলে, নামে বার্ধক্য অশনি
মাশতুতো, পিসতুতো, পাড়াত ছেলে মেয়েদের
নানা কিসিমের বাবাদের দেখে পুড়ে যেত মন
অদৃষ্টে লেখা আছে ভেবে ফিরে যেতাম, কোলে শ্বাপদের
এমনি করে একদিন-
রাজার বাড়ি খালি করে দিয়ে বাবা, তুমি চলে গেলে
দূর দিগন্ত অস্ত যেখানে যায় তার কোন এক শিখার সাথে
তোমার অস্তিত্ব, আত্মার যেটুকু ছিল বাকি তা মিলিয়ে
শোনা মাত্রই খুশিতে রক্তের বান শিরায় ছুটিয়ে গিয়েছিলাম ধেয়ে
জানতাম মানুষ বেচে থাকলে বদলায়, মরে গেলে পচে যায়
ভাবলাম শেষবারে পচে যাও তুমি একদলা ঘৃণা পেয়ে
ছলকে উঠল রক্ত, ঘুরে গেল মাথা, পায়ের নিচে মাটি সরে গেল
একি শুনলাম! শ্বাপদের চামড়া সরে দূগর্ন্ধে শ্বাস গ্রাস করে নিল
দেখলাম সাদামাটা বিছানায় রাজা শুয়ে আছে,
ঘৃনার দলা থেকে গজিয়ে উঠেছে শত শত ফুল
অস্ত যাওয়া শিখাটা ফিরিয়ে দিতে চাইলাম আবার...
বাবা, তোমাকে দেখতে হবে বলে একদিন
ফিরিয়ে নিয়েছিলাম দৃষ্টি, দুহাতে ঢেকেছিলাম চোখ
সে হাত আজ তোমায় হাতড়ে বেড়ায়
আজকাল বড় বেশি চোখে ধূলো বালি পড়ে
নইলে শুধু শুধু জল গড়াবে কেন?