আমার একটা বন্ধু ছিল
নাম ছিল তার সুমন.
নামের সঙ্গে সত্যি তার
মনটাও ছিল তেমন.
ওর মনের জমে থাকা যত
দুঃখ কষ্ট ব্যথা
লুকোতোনা ও কিছু আমার থেকে
বলত সবই কথা.
ওর জীবনেও ছিল এক প্রেম
সবার যেরকম হয়
কিন্তু তার story টা কিছু অন্যরকম
যা সবার মতো নয়.
একদিন কলেজ থেকে বিকালবেলায়
বাড়ি ফেরবার পথে
পেছন থেকে কেউ একটা মেয়ে
ডাকল ওকে দেখে.
"ooooo silky hair............"
পেছন ফিরে তাকাল সুমন
চিনতে পারলোনা তাকে,
জানতোও না তার নাম,
বলল "who me"
মেয়েটি বলল "yes you,
you looking so handsame".
অবাক হয়ে কিছুক্ষন পরে
ফিরে গেল সে ঘরে,
ভাবলো বসে, কে ছিল সে মেয়েটি
যে আমায় ডাকল এমন করে!
কিছুদিন পরে বন্ধুদের থেকে
জানতে পারলো সে,
কেউ না আর, সে ছিল তার
পাশের বাড়িরই মেয়ে.
শুনে তাদের কথা ভাবলো সে একা একা.
"ছোট থেকে বড়ো হয়েছি
এই গ্রামেতেই আমি
আর সে ছিল আমার এত পাশে
আগে দেখিনি আমি!"
ব্যস,তখন থেকে করে নিল ও তাকে
সে তার মনের মোহিনী,
আর তারপর থেকেই শুরু হল
তার এ প্রেম কাহিনী.
থাকতোনা মন আর তার মনের ঘরে
উড়ে বেড়াত একা,
ফিরে এসে মাঝে মাঝে বলতো সে শ্বাস ফেলে
কবে হবে যে আবার দেখা.
এমনি ভাবেই চলতে চলতে
কেটে গেল কিছুদিন,
ভাবলো সে এবার বলেই দেবে
তার মনের কথা একদিন.
তারপর একদিন বন্ধুদের দিয়ে
বলেই দিল তাকে,
তার এ মন চায় শুধুই ওকে
আর তাকে সে ভীষন ভালোবাসে.
শুনে সেই কথা, চুপ করে থাকলো মেয়েটি
বললোনা কিছু ওকে,
জানিনা কেন, মনে মনে সেও হয়তো
ভালোবাসতো তাকে.
কিন্তু তার এই চুপকরে থাকা দেখে
বুঝে নিয়েছিল সুমন,
বলুক আর না বলুক কিছুই সে
ভালোবাসে ওকে তারও মন.
তারপর থেকে রাস্তায় কোনোদিন
একসাথে হলে দেখা,
হাসতো কখনও দুজন দুজনকে দেখে
বলতোও কখনো কথা.
এইভাবে হাসতে হাসতে দেখতে দেখতে তাদের
কেটে যাচ্ছিল দিন,
পারতোনা থাকতে কেউ কাউকে
না দেখে তারা কোনোদিন.
ভীষন ভালোবাসতো সুমন ওকে,
বলছিনা বন্ধু বলে.
খুঁজে ফিরত তাকে সে এদিক ওদিক
চোখের একটু আড়াল হলে.
ভাবতো সারাদিন ও শুধু তারই কথা,
এক পলকও ভুলতোনা ওকে.
ঘুমিয়ে যেত রাতে তবুও
দেখতে পেত স্বপ্নে তাকে.
ভুলে গেল সে সব আনন্দ সব শখ
তার জীবনের সব খুশি.
একটাই কারনে,
দেখতে চাইতো সে শুধু তার
জানুর মুখের হাসি.
তার জানুকে পাওয়ার জন্যে
এমন কী না করেনি ও,
এমনকী রাত জেগে ক্লান্ত হয়ে
কখনও করে আসতো কাজও.
এইভাবে গড়েছিল তারা
তাদের ভালোবাসার নীড়,
দিন গেল সময়ের সাথে সাথে
তাদের ভালোবাসাও হল গভীর.
অনেক উপহার দিয়েছিল তাকে ও
সে তার দুহাত ভরে,
মেয়েটিও ভালোবাসতো ভীষন ওকে
ফেলতোনা সে,
রাখত সেগুলো খুব যত্ন করে.
হারিয়ে গেলে অন্য কথা
কিন্তু থাকবে জীবন যতদিন,
কথা দিয়েছিল মেয়েটি তাকে
ভুলবেনা কখনও কোনোদিন.
আপন করেছিল নিজেদের দুঃখ খুশি
একই সঙ্গে তারা,
কাঁদতো যখন একজন,কষ্ট পেত আরেকজন
সত্যি এইরকম ছিল তারা.
বেঁধেছিল তারা নিজেদের জীবন
একে ওপরের সাথে,
বানিয়েছিল তারা এক সপ্নের দেশ
তাদের চলার পথে.
ভেবেছিল সুমন,
ভাঙবেনা কখনও স্বপ্ন তাদের
থাকবে অটুট আজীবন,
এইভাবে তাকে ভালোবেসে সে
কাটিয়ে দেবে সারাজীবন.
কিন্তু স্বপ্ন শুধু সত্যি হয়
ঘুমিয়ে থাকে যখন,
ঘুম গেলে ভেঙে, স্বপ্নও যায় ভেঙে
ফিরে আসে আবার একাকিত্ত তখন.
হ্যাঁ, হঠাত্ করে তার জীবন
পালটে গেল এক বিশাল ঝড়ে,
ভেবেছিলোনা যা কখনও স্বপ্নেও সে!
আছড়াতে পারে সেই বেনাম ঝড়
এমন করে তার উপরে.
বুঝতে পারছিল কিছুদিন থেকে সুমন
এড়িয়ে যাচ্ছে মেয়েটি তাকে,
যে থাকতে পারতোনা না দেখে ওকে
যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল একদিন তাকে.
তারপর একদিন, জানতে পারলো সে
যা বিশ্বাস হচ্ছিলনা তার নিজেকে,
মনে মনে কবে থেকে মেয়েটি
ভালোবেসেছিল অন্যকাউকে.
এতদিনের স্বপ্ন তার
এক নিমেষে গেল ভেঙে,
ঘুম থেকে উঠে সে
আবার গেল ঘুমিয়ে.
বহুদিন হয়ে গেছে সেদিন থেকে.............
আজও ওর মন `কখনও' র আশায়
ফিরে যায় তার কাছে এসে,
না থাকলে কেউ তার কাছে
তার পাশে এসে বসে.
অনেক বুঝিয়েছিল সে তাকে
যদি ও ফিরে আসে,
উঁহঃ , কিন্তু বোঝলোনা পাগলি
তার সুমন তার স্নেহাকে কতটা ভালোবাসে.
Everything are changeable.......