মা দিবস আজ থেকে ঠিক ৩৬৫ দিন আগের কথা // রবি
জীবনের প্রথম মা দিবসের সাথে পরিচয় হয়ে ছিল আমার,
আমার বাবাকেও আমি ভালবাসতাম ঠিকি
তবুও মায়ের প্রতি গুপ্ত ভালবাসাটা ছিল একটু বেশি
এর কোন নিঃদৃষ্ট কারন জানতাম না ।
বাবা সারা দিন চৌকির এক কোণে জরোসরো হয়ে বসে থাকতো
কখনো বা চিৎত হয়ে শুয়ে থাকতো ।
হঠাৎ হঠাৎ বাবার রক্তময়ী দুটি চোখ বড় বড় হয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে
যেন বেরিয়ে আসতে চাইতো বাঁচার জন্য বাবা চৌকির পায়া খামচে ধরতো
জোরে জোরে শ্বাস গ্রহন করতো আমার বাবা,
আমার বাবা শ্বাস প্রশ্বাসের রোগি ছিলেন ।
আজ থেকে ৩৬৫ দিন আগের কথা, তখন আমার মাথায় মা দিবসের ভুত ঢোকে যায়
মাকে কি উপহার দেওয়া যেতে পারে ভাবতে ভাবতে
হৃদয় ভেদে মা দিবসের দংশনে পুরতে থাকি ।
এদিকে আমার পকেটে তখন চারশত টাকা ছিল জানতাম বাবার ঔষধ শেষ ,
বাবার জন্য ঔষদ কিনতে হবে তবুও বাবার ঔষধ না কিনে মায়ের জন্য একটি রঙ্গিন শাড়ি কিনে বাসায় ফিরি ।
মায়ের হাতে রঙ্গিন শাড়িখানা দিতেই মা খুশিতে আতহারা
মা তখনও জানতো না যে আমার পকেটের সব টাকা দিয়ে মায়ের উপহার কেনা হয়েছে ।
সকাল হতেই মা বলল তোর বাবার ঔষধ আনতে হবে ,
আমি ঔষধ আনবো আনবো বলেও টাকার অভাবে বাবার ঔষধ আনতে পারছিলাম না ।
দেখতে দেখতে কিছু দিন পার হল,
এক দুপরে আমি তখন দোকানে
বাসা থেকে কল আসলো বাবার শরীরর ভাল না দৌড়ে বাসায় গিয়ে দেখি
বাবা অস্থির, বাবা শ্বাস ফেলতে পারছেন না
বাবার মুখ দিয়ে ফেনা ঝড়ছে ।
তখন শত চেষ্টা করেও বাবাকে বাঁচাতে পারলাম না,
চোখের সামনে গরিব হওয়ার দোষে আমার বাবাকে হারালাম ।
আজ পর্যন্ত কেউ জানে না আমার বাবা মৃত্যুর কারন ।
অবশেষে বাবাকে পুড়ালাম শশ্মানে,
ভাঙ্গলো মায়ের হাতের শাঁখা
সাদা কাপড়ে মায়ের সারা শরীর এখন ঢাকা,
মিটে গেছে মায়ের কপালের লাল শিঁথির সিঁদুর ।
মাকে দেওয়া রঙ্গিন শাড়িটা আজও আছে মায়ের চোখেরই সামনে
অথচ আমারই দেওয়া উপহার রঙ্গিন শাড়িটা মা পারতে পারবে না কোন দিন সেটাই ইতিহাস বলে ।
কিছু বানান ভুল আছে সরি ।