বৃক্ষতলে শীর্ণকায় দেহ, অপসৃয়মান;
মস্তকে রুক্ষ কুঞ্চিতকেশ, জটাজুটধারী
গুম্ফশ্মশ্রুসমন্বিত, বলিরেখাঙ্কিত কপোল
লোলচর্ম বসে আছে এক জনম ভিখারী।
কবে যেন রাজপুত্র শুনেছিল; সঙ্গীতে
কিন্নর-কিন্নরী তুচ্ছসম, সূর্য অস্তমিত।
জানিনা কি রাগ বেজেছিল সেই কন্ঠে
নয়নে ছিল অশ্রুধারা, হৃদয় পরাজিত।
পরাজিত হৃদয় ক্রন্দনে উন্মত্ত, বিচলিত
মৃত্যুযাত্রী, মৃত্যুকামী, মৃতদেহের ভীড়ে
হারিয়ে যায় অনুভূতি, ভালথাকার স্পৃহা
মিলিয়ে যায় সেই অপূর্ব সঙ্গীত অচিরে।
"কী হবে এই ঐশ্বর্য, এই সুখ বিলাসিতা?
কী হবে মণি, মুক্তা, মরকত, স্বর্ণাভ?
শরীর তো নিমিত্তমাত্র, পুড়ে গেলে ছাই
তবে,আত্মা অবিনশ্বর।", ভাবেন অমিতাভ।
মনে আছে সেই ঊষা, তখনো অন্ধকার
ঘরছাড়া কালোপেঁচা তখনো শিকার খোঁজে
শ্বেতহংস লুকিয়েছে ডানা; সবাই ঘুমে জড়
রাজপুত্র বানপ্রস্থে গেলেন পদব্রজে।
সহসা চিন্তার জাল ছিন্নভিন্ন করে কারা
দূর থেকে ভেসে আসে মড়া পোড়ার ধ্বনী
আসে কান্নার শব্দ, মৃত চুল্লীর কাঠ আগুনে
জগতে দুঃখ আছে, বাজে দুঃখের আগমনী।
কিন্তু দুঃখও ক্ষণস্থায়ী, ভাসে কলরোল
আচমকা পাখির ডাক জেগে ওঠে বনে
মনের গভীরে থাকে বিস্মৃতির নিদাঘ
যেন কোনো দেবশিশু খেলছে নিজমনে।
সুখ-দুঃখ বালুকণা, নদী বহে নিরন্তর
দিন আসে নিজের মতো, দিন চলে যায়
আত্মার ধারক দেহ, শুধু এটুকুই অন্তর
ক্ষণেক ভেবে বুদ্ধ বসেন তপস্যায়।।