তোমার ঐ লাস্যময়ী দৃষ্টি ছুঁয়ে গেছে বারবার
আমার প্রেমের অনন্তশয্যা...
আঁখিপল্লবে হয়তো ছিল সবুজ বিষের দাগ
অথবা, চোখের প্রান্তে জমানো আবেগে
মিশে ছিল ধূসর নিদাঘ।
আমি দেখেও দেখিনি।

আমি দেখিনি তোমার গোলাপি ঠোঁটের ভিতরে
জমাট অন্ধকারে...
জিভের প্রগাঢ় আবেশে ওতপ্রোত
বিস্ফোরণে উন্মত্ত আগ্নেয়গিরির লেলিহান শিখা, আর
দুকোণ ঘেঁষে বেরিয়ে আসা উত্তপ্ত ম্যাগমায় প্রতিবার
রূপান্তরিত হয়েছে হৃদয়ের পাললিক শিলা।

আমি দেখিনি কি বিষাদ জমা হয়ে আছে তোমার
অবিন্যাস্ত, অগোছালো এলোচুলে;
আর, আঙুলের ভুলে...
খানখান হয়ে গেছে প্রেমের উদ্যত ফণা, তবুও
আমার সারা শরীর ছুঁয়ে গেছে লকলকে জিভওয়ালা সর্পিলশ্রেণী
আমি দেখেও দেখিনি।

জানি তুমিই একদিন আমার জ্বলন্ত চিতার পাশে
ছড়িয়ে দেবে রজনীগন্ধা ফুল...
আমি জানি সব; তুমি আমার এক আদ্যপান্ত অশরীরী ভুল
তবুও আমি সে ভুলে রাজি, তোমাকে যতবার কাছে পাই
পাথুরে চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে
                                          আমি অন্ধ হয়ে যাই।

_________________________________
পাদটীকাঃ গ্রীক পুরাণে মেডুসা পৃথিবী আর সমুদ্রের সন্তান ফোরকিস আর কেতো এর কন্যাসন্তান, অপরূপ সুন্দরী, এথেনার একনিষ্ঠ পুজারিনী ছিলেন। দেব-দেবীদের অভিশাপে পাতালে প্রবেশ করেন। মাথায় ঢেউ খেলানো সোনালী চুলের জায়গায় হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ অভিশপ্ত সাপ। আর, ভুল করে কেউ চোখের দিকে তাকালে অন্ধ হয়ে যায়, সারা শরীর পাথর হয়ে যায়। ডেমি-গড বা অর্ধমানব-অর্ধদেবতা পার্সিয়ূস (বজ্রদেবতা জিউসের ঔরসজাত সন্তান) মেডুসাকে বধ করেন।