গভীরতম রাত্রি!
কোন এক জাদুকাঠির ছোঁয়ায়
ঘুমিয়ে সবাই যেন মৃত।
জেগে থাকে শুধু লকলকে জিভওয়ালা রাস্তার একচোখা আলো,
আর ক্লান্ত প্রসারিত
চোখের দুটো পাতা।
চারিদিকে অন্ধকার জমানো নিস্তব্ধতা;
সেই নৈঃশব্দ কে ছিঁড়ে কুটি কুটি করে
ঝিঁ ঝিঁ-র ডাকের তীব্র নখর।
বাড়ির ছাদের কার্নিশে
এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে
সাদা-কালো ছোপ ধরা কয়েকটা বেড়াল।
পাশের মরা কাঁঠাল গাছের
ডালপালা গুলো সশব্দে নাড়িয়ে দিয়ে
লাফ দিয়ে পড়ে যেন কিছু একটা-
কে?
আমি।
"আমি" কে?
আমি বাতাস।
বাঁশবনে কাদের চোখ যেন ভাঁটার মতো জ্জ্বলছে
নিভছে;
এলোমেলো ইতস্ততঃ ভাবে ঘুরছে-
কে?
আমি।
"আমি" কে?
আমি জোনাকি।
পাশের জলায় খচখচ শব্দ
পাতা পড়ার।
ঝুপ করে নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে যায়-
সাপে ব্যাঙ ধরলো বোধহয়;
শুনশান রাতে চলতে থাকে শিকার-শিকার খেলা...আর
মাথার উপর দিয়ে কয়েকটা কালো পেঁচা
বিশ্রী ভাবে ডাকতে ডাকতে উড়ে যায়।
শোওয়ার ঘরের জানালার রেলিং বেয়ে
শুকনো মাটিতে
টুপ করে কিছু একটা পড়ল-
কে?
আমি।
"আমি" কে?
আমি শিশির।
ছাদের উপরে কালো মতো
ওটা কী!
জায়গাটা আবছায়া মতো
তারই মাঝে জমা হয়ে আছে
কিছু একটা সজীব পদার্থ।
কে?
বোধহয় শুনতে পায় না;
কে তুমি?.....কে?
আস্তে আস্তে সে এগিয়ে আসে,তারপর
হিংস্র বাঘের মতো আমার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে
নির্দয় পাষাণের মতো সমস্ত নিস্তব্ধতা কে
খান খান করে দিতে দিতে
শান্ত অথচ কঠিন গলায় সে উত্তর দেয়
"আমি" ভয়।
(প্রবাদ প্রতিম কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় কে উৎসর্গ করলাম।)