চমৎকার একটা কবিতা এই "ষড়যন্ত্র"। সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ের বহুল আলোচিত একটি ঘটনার ভেতরের অন্তঃসার, এই কবিতার পঙক্তি গুলো।
লিখেছেন এ আসরের মধ্যমনিদের একজন সম্মানিত কবি, প্রনব মজুমদার। এ আসরে নিয়মিত না লিখলেও, যাই লিখেন। তাই পাঠক প্রিয়তা পায়। বস্তুতঃ তার অল্প কথায় সুন্দর উপমা ও শব্দ চয়নে বিশদ কোন ভাব ফুটিয়ে তুলাই এর কারণ। যেমন ধরুন, আজকের কবিতায়,
"জানলা ধরে দাঁড়িয়ে আছে মধ্যবিত্ত"
"জানলা ধরে" শব্দ দু'টো দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন কোন ঘটনার একদম কাছ থেকে দেখা। "দাঁড়িয়ে আছে" দ্বারা অধির আগ্রহে থাকা প্রত্যক্ষ দর্শীর অপেক্ষার কথা বুঝানো। হতে পারপ বিচার প্রার্থী, হতে পারে স্বাক্ষী দাতা। আর "মধ্যবিত্ত" শব্দ টা দারুণ প্রয়োগ এই লাইনটাতে। কবি এটিকে রূপক হিসাবে ব্যবহার করলেও এর কারন টা কিন্তু সহজেই অনুমেয়। কোন ঘটনার সবচেয়ে ভুক্তভোগী বা আগ্রহী ব্যাক্তিটিই হলো এই সমাজের মধ্যবিত্ত। ধনীরা তো সব ঘটনার আড়ালেই থাকে। নিন্মবিত্তের সময় কোথায় আগ্রহ দেখানোর। তাঁদের তো নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। আমার ভাবনা মিলে যায় পরের চরণে। "বিচার পাবে কি পাবে না এই সংশয়ে/ দোদুল্যমান তাদের চিত্ত"।
পরের দু'টো লাইন একদম দূর্দান্ত। সাংঘাতিক রকমের সুন্দর শব্দ আর আলংকারিক উপমা! ভীষণ সুন্দর। এই যেমন "কটুশব্দরা"! এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় পরিমিত বোধের ব্যবহার। কটুশব্দরা বলতে কবি সেই সব মানুষ ও তাদের মুখনিঃসৃত বাক্য সমূহকে বুঝিয়েছেন যারা কোন বস্তুনিষ্ট বা সত্য ঘটনার বিরোধীতা করে যেখানে সেখানে যখন তখন। " যত্রতত্র" শব্দটিও আমাদের সেকথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে কবিতায়।
শেষ লাইনেই চমকটা মূলত ছিলো। "মহা দূর্বৃত্ত" যেকোন ঘটনারই কেউ না কেউ থাকে মূল ব্যাক্তি। যে কিনা পুরো ঘটনাটাই নিয়ন্ত্রণ বা যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। "মহাদূর্বৃত্ত" দ্বারা কবি সেই রকম কোন ক্ষমতাধর ব্যাক্তিকেই বুঝাতে চেয়েছেন। যার হাতেই আছে কবিতায় উল্লেখিত ঘটনার লাটাই সুতো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ সম্মানিত কবি কে অমন সুন্দর কবিতা উপহার দেয়ার জন্য।
২৯/০৯/২০২৪ইং
চট্টগ্রাম।