"জান্নাত তুল্য মা জননী
আমায় গেছে ছাড়ি,
সন্ধ্যের পরে কেউ বলে
আয়রে খোকা বাড়ি।"

মা হারানোর বিরহ মাখা লাইন দুটো যে কারো চোখে জল এনে দিবে। জগতে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব কতো মানুষ আছে। কিন্তু মায়ের মতো কেউ কি বলে, "আয়রে খোকা বাড়ি।"! আজকাল যেখানে ভালোবাসার আড়ালে মানুষের স্বার্থ দ্বন্দ্ব উৎ পেতে থাকে, সেখানে মায়ের অমন মায়া ভরা ডাক; যে কোন পাষাণ হৃদয় কেউ ছুঁয়ে যাবে অনায়াসে।

এমনি এক সুন্দর কবিতা " জান্নাত তুল্য মা" লিখেছেন বগুড়ার গুনী কবি, আব্দুল ওহাব। পেশাগত জীবনের শৃঙ্খলার মতো কবিও ভালোবাসেন ছন্দের নিয়মশৃঙ্খল। তারই প্রমাণ স্বরবৃত্তের ছন্দে ৪+৪+৪+২ মাত্রায় লিখা আজকের এই কবিতা। এ আসরে তাঁর উপস্থিতি মাস তিনেকের হলেও কাব্য চর্চা অনেক আগে থেকেই। অনেক গুলো কাব্য সংকলনই তাঁর প্রমাণ।
মাতৃ ভালোবাসার জলন্ত উদাহরণ তার পরের স্তবক। স্বর্গবাসী মা বিয়োগের কষ্ট কবিকে কাঁদিয়েছে ভীষণ ভাবে, নাড়িয়ে দিয়ে অন্তর আত্মা। মায়ের অনুপস্থিতি তাঁকে দুঃখে ভাসায়। বিশেষ করে খাবার সময়। কেননা, মা ছাড়া তাঁর খোঁজ খারার মতো কেউ নেই এই পৃথিবীতে।
শেষ স্তবকে কবির দুঃখের প্রকাশ ভীষণ সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে কবিতায়। সুন্দর কবিতার সমাপ্তি। ভীষণ ভালো লাগলো।
আপত্তি শুধু চতুর্থ স্তবকের "দেখছি" শব্দটা নিয়ে। মা গত হয়ে থাকলে, কবি তাঁর হৃদয় টা তো কবি দেখেছেন বা দেখেছিলেন। "দেখছি" এর ব্যবহার আমার কাছে মা বর্তমান আছেন সেই ভাবটাই ফুটিয়ে তুলছে।
তবুও আমার চোখে স্বরবৃত্ত ছন্দ লালন করা এ আসরে আমার অনেক প্রিয় কবিদের মধ্যে কবি আব্দুল ওহাব আমার কাছে একজন। আমি তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।