আমি নিখিলেশকে চিনি
চিনি রাজদ্বীপকে  , চিনি অমরকে
আমি জালিয়ানওয়ালাবাগ দেখেছি ,আমি নকশাল দেখেছি
আমি মানুষ হয়ে হেঁটে গেছি মানুষের সাথে
কিন্তু মানুষকে চিনেছি কতটা  ?
.
সম্ভবত এই কারণে আমি সেই ক্লান্ত মানুষটার সাথে হেঁটে ফিরেছি বাড়িতে
যে তার স্ত্রীর দুরারোগ্য ব্যাধিতেও  চুলে গুঁজে দিয়েছে রজনীগন্ধা।
সেই মানুষটা যে তার দশটা পাঁচটা চাকরির ফাঁকে
বারংবার ছুটে গেছে তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যার কাছে
শুধু একবার বাবা ডাক শুনতে।
সেই মানুষটাই আবার তার বসের কাছে খুব শান্ত হয়ে শুনেছে
এইবার একটু কাজে মন দিন
জানি আপনার স্ত্রী অসুস্থ ,মেয়ে ছোট
কিন্তু আমাকেও ওপরে জবাব দিতে হয়।
.
সম্ভত এই কারণে আমি গিয়ে দাঁড়িয়েছি একমাত্র সন্তান হারানো মায়ের পাশে
যে সন্তান বহুকষ্টে নিজের হাতে তিলতিল করে গড়ে তুলেছিল মা।
সেই সন্তান যে নিজের প্রেমিকার অবহেলায় গায়ে আগুন দেয়
সেই সন্তান যে নিজেকে প্রেমিক প্রমান করতে
ভুলে যায় তার আত্নীয়স্বজন ,বন্ধু ,সমাজ
এমনকি মাকেও।
সেই মায়ের চোখের জলে আমি দেখতে পেয়েছি পৃথিবী ভাঙার শোক
সেই মায়ের জ্বালায় আমি নিজেকে পুড়িয়েছি
খুঁজে পেয়েছি বাঁচার অভাব।
.
সম্ভবত এই কারণে আমি বিভিন্ন গুগুল সার্চে খুঁজে পেয়েছি নিলাজ সমাজ
খুঁজে পেয়েছি হাজারো একাকিত্বে ভোগা একলা রমণী।
খুঁজে পেয়েছি মরে যাওয়া প্রেম ,হঠাৎ বাঁচা অধিকার
খুঁজে পেয়েছি বিছানায় শুয়ে থাকা নিলজ্জ কবিতা।
হাজারো সেই সব কামাসক্ত পুরুষ যারা বাড়িতে স্ত্রী রেখে
ইনবক্সে নিজের গড়িয়ে নামা কামেসিক্ত  নিলজ্জ ৱাতে ।
খুঁজে পেয়েছি এমন সব অদ্ভুত সমাজ
অদ্ভুত কিছু মানুষ
যারা এত ডামাডোলের মাঝেও সৃষ্টিতে মত্ত।
.
আমার এই কবিতা মানুষ চেনার
সেই মানুষটার জন্য  ,সেই বাবার জন্য যাকে তার উপার্জনের ব্যস্ততায়
ভুল বোঝে সংসার,ভুল বোঝে স্ত্রী সময় না দেবার জন্য ।
আমার এই কবিতা সেই মেয়েটার জন্য
যে মেয়েটা বাবার ওষুধের জন্য  নির্দ্বিধায় সমাজে শাড়ি খুলে দাঁড়ায়
যাকে কটুক্তি করে সমাজ ,যাকে বেশ্যা নামের পদবি দেয়।
আমার এই কবিতা সেই শৈশবের জন্য
যে জুলু জুলু চোখে চেয়ে থাকে সমবয়সী ছেলেটার দিকে
যাকে ফ্ল্যাটে থাকা ছেলেটার মা মিশতে দেয় না নিজের ছেলের সাথে।
আমার এই কবিতা সেই সমাজের জন্য
সেই ভদ্রমহিলার জন্য যে পাশের বাড়ির মেয়ে পালিয়েছে বলে গসিপ করে
ভুলে যায় তার মেয়েটি নিয়মকরে কোনো হোটেলে কারোর বিছানা সাজায়।