'অশ্রু' শব্দটির অর্থ হতে পারে বিবিধ
আভিধানিক অর্থে চোখের জল
অথচ অশ্রু আস্ত একটা অভিধান
সহস্র অনুভূতিতে জন্ম দেয় সহস্র প্রতিদান।
কখনো সে নিষ্পাপ শিশুর ডাক
হয়তো 'মা'শব্দটা ডাকার জন্য
স্বরযন্ত্রটা প্রস্তুত হয়নি এখনো
তাই মা শব্দটা বেরিয়ে আসে তার কান্নায়।
কখনো সে উদরপূর্তির আনন্দ অনুভূতি
সাত দিন আর সাত রজনীর অনশন শেষে
একবেলা অর্ধাহারের পর,
আভিধানিক অর্থ পাল্টে হয় তৃপ্তির প্রতিধ্বনি।
কখনো সে ক্ষুধার্ত লোকটার চোখের ঘৃণা
দ্বারে দ্বারে অভুক্ত অবস্থায় ঘুরে
অবশেষে ক্ষুধার তীব্র জ্বালা মিটাচ্ছে
শুষ্ক চোখের পবিত্র নোনা জলে।
কখনো সে রাস্তায় প্রতিবাদী মিছিল
অধিকার আদায়ের জন্য বুকফাটা চিৎকার
ভাইয়ের হত্যার নিষ্কলঙ্ক বিচার দাবি আর
ধর্ষিতা বোনের ধর্ষককে বোনেরই লালসালুতে
ফাঁসিরে দাবিতে বোনের পবিত্রতার জন্য হাহাকার।
কখনো সে বিশ্বাসঘাতক প্রণয়িনীর ছলনা
গতকালকেও যার সাথে ফুচকা খাওয়া
আর অমর প্রণয় কাহিনী রচনার প্রতিশ্রুতি
তার জন্যই অদ্যরচিত বিষাদ আত্মহুতি।
কখনো সে কবির কলমের কাব্যিক অনুভূতি
সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম- প্রীতি
আর লেখকের আত্মচেতনার মিলনে
যেন সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশু কন্যা।
আবার কখনো সে শিক্ষকের চোখের ভালোবাসা
ছাত্রের জন্য চোখের কোনায় পুঞ্জিভূত এক ভরসা
কিংবা স্বর্গ থেকে বয়ে চলা স্রোতসিনী,
অথবা ভিঞ্চির অঙ্কিত মোনালিসার মুখ খানি।
আর এমনই এক স্বর্গীয় দৃশ্যের সামনে
পাথুরের মূর্তি হয়ে শুধুই দাঁড়িয়ে ছিলাম নির্বাক মনে
যার সাক্ষী ছিল আমার হৃদয়ের অদৃশ্য এক কান্না।