পাড়া গাঁয়ের সরল লোকের ,
একটি বিরল ঘটনা।
একটি ছেলের জন্য হলো,
সাতটি মেয়ের যন্ত্রণা।
স্বপ্ন দেখেন রহিম উদ্দিন,
একটি ছেলে হবে।
সবার চেয়ে লেখাপড়ায়,
অনেক ভালো হবে।
বিবি উনার ময়নামতি,
অনেক রুপবতী।
স্বামীর সুখে ভাবেন তিনি,
সারা দিবারাত্রি।
ময়নামতির প্রথম প্রসব,
হবে যেই রাত্রে।
রহিম উদ্দিনের স্বপ্নপূরণ
হবেই বুঝি তাতে।
রাত তখন সোয়া বারোটা,
স্তব্ধ নির্জন রাত্রি।
দাইমা তাকে ডেকে বলে,
মাইয়ার বাপ হইছ-
ও রহিম উদ্দি…।
মাইয়া হইছে শুনিয়া চাচায়,
বেজায় দুঃখ পায়।
স্বপ্নের সিড়িঁ বুঝি বন্ধ হইয়া যায়।
মুরুব্বিরা বলেন সবে,
পহেলা মাইয়া ভালা।
ভালা ঘরে সংসার করবো,
তুমার এই মাইয়া।
এসব কথায় শুনিয়া চাচা,
মন শান্ত করে।
এরপরেও স্বপ্ন দেখে,
একটি ছেলের জন্যে।
যে ছেলেটি বড় হয়ে,
হবে বড় সার্জন।
কারিকারি টাকা সে-
করবে কত উপার্জন।
এভাবেই সাতেক বছর,
হয়ে গেল পার।
সাত-সাতটি মেয়ে হলো,
রহিম উদ্দিন চাচার।
এজন্যে ময়নামতি একমাত্র দায়ী
একটি ছেলে দিতে পারলা না,
তুমি কেমন নারী।
চাচা আমার বেজায় দুঃখী,
কষ্ঠে জর্জরিত।
তার পরেও বলে চাচা,
আ্ল্লায় একটি-ছেলে যদি দিত।
স্বপ্ন তার রয়েই গেল,
মনেরই গহীনে।
শরীরে তার ঘুনে ধরেছে,
বয়সের-ই আধিক্যে।
রিক্সা আজ চালাতে পারে না,
কমে গেছে পেশির জোর।
সংসার ছেড়ে চলে যেতে চায় মন,
দূর বহুদূর ।
জমি জমা কিছু ছিলনা,
ছিল শুধু বাড়ি।
সাতটি মেয়ের ভরন পোষন,
করবে কে আজ শুনি।
মেয়রা তার বড় হচ্ছে,
তাও অন্ন ,বস্ত্রহীন।
নুন আন্তে পাতা ফুরোয়,
ভাঙ্গা ঘরের টিন।
ঝড় বাদলের দিনে সবার,
অর্ধ অঙ্গ ভিজে।
সেই অঙ্গ দেখতে সমাজ,
অনেক সুযোগ খুজেঁ।
বেশি কিছু না -একটি আশা,
ছিল চাচার মনে।
সবই তা নাশ হয়েছে,
নিয়তীরই গ্রাসে।
বুঝল চাচা অবশেষে,
কপালে নাই লিখা।
থাকলে আল্লায় ছেলে দিয়া,
ঘুচাইত সব ব্যথা।