উলূপী আমি অখ্যাত  জীবন ভর  হার,
  ভার্যা তবু অপরাজয় অর্জুন তোমার!
দেবতা গনের কাছেও বুঝি হওনাকো পরাস্ত
  আভিজাত্যের সব টুকু তব পায়ে ন্যাস্ত।
গরিমা তোমার স্বর্গ মর্ত্যে একেবারে উত্তাল,
  জীবন নদীর স্রোতের দিকে তুলে দিয়েছ পাল।
আমি তখন নাম নাজানা অপরিচিত ফুল
  তোমার প্রেম ক্ষুধায় মগন খুঁজছিল কুল।
বৃষ্টি  ধারা  হয়ে এলাম  যেন প্রথম আষাঢ়!
  সহস্র বছর অপেক্ষা বুঝি হলো এবার পার!
একেবারে ফুটি ফাটা তব হৃদ প্রাঙ্গন,
  থেমে গেল  হৃদের চাকা  শত ক্ষণ মন।
তব অপেক্ষার  বারো বছর  শত দীর্ঘ সাল,
  তাই অর্জুন প্রেম ভিখারী আমায় দিলে কাল!
তোমার মাঝে  সর্মপন করে ছিলাম সেদিন...
  কেমন করে ভুলবো আমি প্রেম সিক্ত ঋণ!
জন্ম নিল ইরাবান পুত্র হয়ে তোমার।
  একাকী মাতা তার আমি এযে সত্যি ভার!
মোর ছায়ায়  ধীরে ধীরে সে চলল পথ,
  তার মৃত্যুতে সুনিশ্চিত তোমার জয় রথ।

গজ গবাক্ষ  আর্জক বৃষক শুক— চর্মবান
  শকুনির এই ছয় ভ্রাতাকে বধে ইরাবান।
মম আত্মজ সেই যুদ্ধে হল সেদিন বলি,
  হয়ে পড়ি খুব একাকী আঁধারে পথ চলি!
পিতা নেই পুত্র  গত স্বামী ছেড়ে চলে...
  কভু তুমি এলেনাকো জীবন পাশার ছলে।
পুনঃ দেখা তোমা সাথে সেই মৃত্যু দোলায়!
  নাগমণিতে প্রাণ ফিরালাম এ ভব খেলায়।
স্বজন হত্যার পাপ ছিটানো তোমার দেহ মনে
  চিত্রাঙ্গদার পুত্র তোমায় দিল মেরে  প্রাণে।
বভ্রুবাহনের হাতে  হলো  তব পরাজয়,
  তব পুত্রই তোমা তরে রেখে গেল ক্ষয়!
অত:পর জন্ম হলো নতুন তুমি অর্জুন!
  নিয়ে গেলে রাজ পুরীতে হৃদে খুশির ধুন!
ভেবেছিলাম কেটে যাবে বাকিটা সময়!
  ভুলে ছিলাম দৃঢ় সত্য অর্জুন মোর নয়।
একদিন কাছে এলো   সে মহা প্রস্থান,
  সাথে নিলে  দ্রৌপদীকে মোর নেই মান।
এ উলূপী রয়ে গেলো নিথর ঘন আঁধারে...
  বাঁচার রসদ ডুবে গেলো গহন মৃত্যু পারে,
মন হত্যা করলে তুমি স্ব হত্যা আমি!
  আমি যে দলিত কন্যা নয় কিছু দামী,
সময় কিছু দেওয়া যায় দলিতদের সাথে
  পাশে নিলে সম্ভ্রম যায় অশনি সেই খাতে!
চির  সত্য যুগে যুগে  বহন করো ধারা...
  তোমার মতো অর্জুনেরা...দিকপাল যারা।