রকেট (Rocket) দেখতে একটি সরু লম্বা টিউবের মত। বাতাসের বাধা এড়ানোর জন্য এর সম্মুখ ভাগ মোচাকৃতির হয়। রকেট বিশেষ দহনশীল পদার্থে পরিপূর্ণ বেলুনাকৃতি যন্ত্র বিশেষ। যার মাধ্যমে ক্ষেপনাস্ত্র, আতশবাজি, মহাকাশযান প্রভৃতি আকাশে উৎক্ষেপণ করা যায়। রকেট যুদ্ধাস্ত্র বিশেষ। রকেট বিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতি যুদ্ধকালীন বৈজ্ঞানিক গবেষণারই অমূল্য অবদান। ভেতরে কঠিন বা তরল জ্বালানি দহনের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া তীব্র বেগে পেছন দিক দিয়ে বের হবার ধরুনই রকেট সম্মুখ দিকে চলে।

এই কবিতা রকেটের মত পেছনে ফেলে যাবে ধোঁয়ার মত মন্দ জিনিস। অর্থাৎ নেগেটিভ বিষয় বর্জন করবে। রকেটের মত দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করার জন্য বিজ্ঞানকে সংযোজন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই উদ্দেশ্য। জোড়া সংখ্যা রাখা হয়েছে কারণ মানুষ একা বাস করতে পারে না। তাই মানুষের সঙ্গী প্রয়োজন। মানুষের মঙ্গলে মানুষ মানুষের জন্য। মানুষ সমাজবদ্ধ বা দলবদ্ধ ও বন্ধত্বপূর্ণ জীবন যাপন করবে। মানুষ পৃথিবীর শুরুতে অনেক সংগ্রাম করে বাঁচতে হয়েছে। তবে বেজোড় সংখ্যায়ও চর্চা করা যাবে। এই বইতে জোড় বিজোড় উভয়ভাবেই চর্চা করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে সভ্যতার সাথে সাথে বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার চরম পর্যায়ে মানুষ আরো বেশী আরাম আয়েশে জীবন যাপন করবে। যদি প্রাকৃতিক কারণে এ পৃথিবী ধ্বংস প্রাপ্ত হয় সে জন্য মানুষ বসবাসের জন্য অন্য কোন বিকল্প বাসস্থান চিন্তায় মঙ্গল ও শনি গ্রহ সহ ব্যাপক গবেষণা করছে। সে সাথে মানুষের চিন্তা চেতনা এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এই কারণে দ্রুত গতির জন্য এই কবিতা রকেট কবিতা। এটি রকেটের আকৃতি জোড়া মাত্রায় সন্নিবেশ করা হয়েছে। যেনো সহজ ভাবে সবাই চর্চা করতে পারে। মানুষ অনেক বেশী কর্মব্যস্ত থাকায় সময় কম পায়। তাই কবিতা ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে। কম সময়ে লেখা চর্চা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রেও রকেট কবিতা অবদান রাখবে মনে করি। একদিকে লেখার জন্য মনের অস্থিরতা থেকে মুক্তি দেবে;  অন্যদিকে লেখাও চলমান থাকবে বিধায় রকেট কবিতা কবিদের স্বস্তি দিবে। এই বিষয়ে কবি সামসুন্নাহার ফারুক বলেন- আমার জন্য ভাল হয়েছে; আমি প্রতিদিন এত কম পাই লেখার জন্য, রকেট কবিতা আমাকে স্বস্তি দিয়েছে।

এই কবিতা বিভিন্ন মাত্রার সন্নিবেশের মাধ্যমে রকেট আকৃতির করে সাজাতে হবে।
প্রথম লাইনে ১ বা ২ মাত্রা
২য় লাইনে ৩ মাত্রা
৩য় থেকে ৮ম লাইন পর্যন্ত ৪ মাত্রা
৯ম লাইনে ১০ মাত্রা
১০ম লাইনে ১২ মাত্রা
১১তম লাইনে ১৪ মাত্রা
১২তম লাইনে ১৬ মাত্রা
১৩ থেকে ১৫তম লাইন পর্যন্ত ৮ মাত্রা সহ মোট ১৫ লাইনের কবিতা।
অথবা
১ম লাইনে ৩ মাত্রা
২য় লাইনে ৬ মাত্রা
৩য় থেকে ৮ম লাইনে ৮ মাত্রা
৯ম লাইনে ১২ মাত্রা
১০ম লাইনে ১৬ মাত্রা
১১তম লাইনে ২৪ মাত্রা
১৩তম থেকে ১৫তম লাইনে ১৬ মাত্রা

অর্থাৎ মাত্রায় রকেট আকৃতি করে সাজালে যা মাত্রা প্রয়োজন হয় সেভাবে মাত্রার সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কবিতা বা ছড়ায় লাইন কোনোটাতে ১৫, ১৬ ও ১৭ পর্যন্ত বা ছড়া ও কবিতার ভাব বা রেশ শেষ করতে যে কয়টা লাইন প্রয়োজন হয় নিতে পারে। রকেট বিভিন্ন আকৃতির আছে। ছড়া বা কবিতা লেখার সময়ও বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করবে। তবে মূল রকেটের আঙ্গিক একই। এই কবিতায় অবশ্যই বিজ্ঞান থাকতে হবে। কেননা রকেট বিষয়টাই পুরো বৈজ্ঞানিক ব্যাপার। আর মানুষের স্বপ্ন ও বাস্তবতার সমন্বয়ে জীবন যাপনে মানুষের কাজের গতি হবে রকেটের মত। তাই এই কবিতা হবে রকেটা কবিতা।
এই কবিতায় মাত্রার অন্তমিলে সাজিয়েও লেখা যাবে। যেমন ১ম লাইনে ২ মাত্রা ২য় লাইনে ৩ মাত্রা। তারপর ৩য় লাইন থেকে ৮ম লাইন অন্তমিল দেয়া যাবে। অথবা ৩য় থেকে ৫ম এবং ৮ম লাইনে অন্তমিল। তারপর ৯ম লাইন থেকে ১২ তম লাইনে অন্তমিল। তারপর ১৩ থেকে ১৫তম লাইনে অন্তমিল দেয়া যাবে। অথবা আদল ঠিক রেখে সুবিধামত যে কোনো লাইন বা লাইন থেকে অন্তমিল দেয়া যাবে। এই অন্তমিলে উচ্চারণের প্রস্বর তারতম্যে রকেট ছড়া লেখা যাবে। অন্তমিল থাকলে রকেট কবিতা পড়তে ভাল লাগে। তবে গদ্য কবিতাও তাল রক্ষা করে লিখলে পড়তে ভাল লাগে। রকেট কবিতা লেখা খুব সহজ নয়। তবে একটু চিন্তা ভাবনা করে প্রথমে বিষয় বা প্রকরণ নির্দিষ্ট করতে হবে। তার রকেট আকৃতি করে সাজিয়ে অর্থবহ করে লিখতে হবে। তবে এই কবিতা ৩টি বৃত্তেই ১৫ লাইনে নির্ধারিত মাত্রায় রেখে কেবল ছন্দগতি প্রকৃতি অনুযায়ী চর্চা করা যাবে। শিশুদের জন্য শিশুতোষ লেখা অন্ত্যমিল ঠিক রেখে রকেট ছড়া লেখা যাবে। রকেট কবিতা স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত ছন্দ একই সাথে প্রয়োগ করে কবিতা লেখা যায়। আবার তিনটি ছন্দের তাল প্রয়োগ করে পৃথক ভাবেও তিনটি ছন্দ প্রয়োগ করে কবিতা লেখা যায়। রকেট কবিতার শিরোনাম দিলে চলবে না দিলেও শুধু রকেট নামেই গাণিত্যিক ১, ২,৩ বা সিরিয়াল নম্বর দিয়েও নামকরণ করা যাবে। কবিতাটি সেন্টার এলাইনমেন্ট করলে রকেট আকৃতির হবে।

বর্তমানে রকেট অনেক বিষয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি রকেটে ২০টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রী হরিকোটার পিএসএলভি-সি৩৪ ৩৬তম ইন্ডিয়া স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)। এর মধ্যে ১৭টি ছিলো বিদেশী। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মান ও ইন্দোনেশিয়ার উপগ্রহ মহাকাশের নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রেরণ করেছে। ইতোমধ্যে মঙ্গল গ্রহে বসবাসের অনুশীলনে ৬ জনের ১টি দল হাওয়াই দ্বীপে বিশেষভাবে তৈরি এক গবেষণাগারে ২৯শে আগষ্ট, ২০১৫ থেকে বসবাস জনমানবশূন্য পরিবেশে মুক্ত বাতাস, তাজা খাবার ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা উপভোগ বিহীন ১ বছর কাটিয়ে ফিরলেন। বিশেষজ্ঞরা আগামী ১-৩ বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষবাহী রকেট পাঠানো সম্ভব হবে আশা করছেন। বাংলার কবিতারও বিভিন্ন দিক উন্মোচিত হোক এই প্রত্যাশা থেকেই রকেটকে কবিতা হিসাবে প্রতীক রূপে ব্যবহার করে রকেট আকৃতির কবিতা লেখার বিষয়টি অনুভব করি। সেই থেকে রকেট কবিতা লেখার আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হতে চলেছে রকেট কবিতা। আরো অনেকেই চর্চা করছেন। মঙ্গল গ্রহে বসবাসের অনুশীলনে ৬ জনের ১টি দল হাওয়াই দ্বীপে বিশেষভাবে তৈরি এক গবেষণাগারে ২৯শে আগষ্ট, ২০১৫ থেকে বসবাস জনমানবশূন্য পরিবেশে ১ বছর কাটিয়ে ফিরে এলেন। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ৬ জনের মধ্যে ছিলেন একজন ফরাসি অ্যাস্ট্রো-বায়োলজিস্ট, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ও ৪জন আমেরিকান-১জন পাইলট, ১জন আর্কিটেক্ট, ১জন সাংবাদিক ও ১জন মৃত্তিকা বিজ্ঞানী। এই সময় তারা সীমিত জিনিস নিয়ে, ছোট্ট বিছানা, পনিরের গুড়া ও টিনজাত টুনা মাছ খেয়েছে।
কবিতা নিয়ে গবেষণার আগ্রহ দেখে একদিন কবি ও সাংবাদিক শেখ সামসুল হক আমাকে বললেন- বাংলা সাহিত্যে প্রচলিত ৩টি ছন্দ এক সাথে একটি কবিতায় ব্যবহার করে কবিতা লেখার চেষ্টা করে দেখেন তাহলে একটা নতুনত্ব দেখা দিতে পারে। তিনি আরো বললেন- পাঁচ তারকার পরে অনেকেই কবিতা লিখেছেন এবং বিখ্যাতও হয়েছেন। কিন্তু সবই জাবর কাটা ছাড়া তেমন পরিবর্তন দেখা যায় না। তারপর বেশ কিছুদিন চিন্তা ভাবনা করে অবশেষে মাথায় আসে রকেট কবিতার। তখন রকেট কবিতার চর্চার মধ্য দিয়ে একদিন চিন্তা করে দেখলাম কবি শেখ সামসুল হকের সেই একই সাথে ৩টি প্রচলিত ছন্দ ব্যবহার করে এই কবিতা লেখা যায়। আর সাথে সাথে চর্চাও শুরু করলাম।    

এর উদ্ভাবক আমি নিজেই (রীনা তালুকদার)। এটি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬ তারিখ থেকে চর্চা শুরু করা হলো। সবাইকে রকেট কবিতা লেখার আহবান জানানো হলো। - এই আহবানে প্রথমে যে কবি সাড়া দিয়ে রকেট কবিতা লিখেছেন তিনি কবি সামসুন্নাহার ফারুক, দ্বিতীয় কবি শেখ সামসুল হক। ধন্যবাদ জানাই দুজনকেই।


এবারে জানা যাক রকেট কি ? কেন ? এর কার্যক্রম কি ?  
রকেট (ইংরেজি: Rocket) একটি বিশেষ ধরনের প্রচলন কৌশল। এটি এমন এক ধরনের যান যেখানে রাসায়নিক শক্তির দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট উৎপাদকগুলিকে প্রবল বেগে যানের নির্গমন পথে বের করে দেয়া হয় এর ফলে উৎপন্ন ঘাতবলের কারণে রকেট বিপরীত দিকে প্রবল বেগে অগ্রসর হয়। এক্ষেত্রে নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র অনুসৃত হয়। (নিউটনের তৃতীয় সূত্র- প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে। অর্থাৎ ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া পরস্পর সমান ও বিপরীত ধর্মী।) তাই এই সূত্রটিকে রকেট ইঞ্জিনের মূলনীতি হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। রকেট ইঞ্জিন প্রতিক্রিয়া ইঞ্জিনের সাহায্যে কাজ করে। এই ইঞ্জিনের প্রচালক কঠিন, তরল বিভিন্ন রকম হতে পারে। বিশ্বে অনেক ধরণের রকেট উদ্ভাবিত হয়েছে। এটি ছোট্ট বোতল আকৃতি থেকে শুরু করে বৃহৎ আকৃতির মহাকাশযানের মতো হতে পারে। এর মধ্যে এরিয়েন ৫ হচেছ অন্যতম বৃহৎ আকৃতির রকেট যা দিয়ে কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করা হয়। জার্মান বিজ্ঞানী বার্নার ফন ব্রাউন সর্বপ্রথম তরল-জ্বালানী ব্যবহার উপযোগী রকেট আবিষ্কার করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির পক্ষে কাজ করেন; কিন্ত পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন। সেখানেই তিনি আমেরিকার মহাকাশ প্রকল্পে কাজ করেন ও চাঁদে নভোচারী  প্রেরণে সহায়তা করেন। তাকে রকেট বিজ্ঞানের জনক নামে অভিহিত করা হয়।

যন্ত্রাংশ ঃ রকেট ইঞ্জিনে যে জিনিসগুলো থাকে তার মধ্যে : পেলোড, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, মহাশূন্যচারী, নিয়ন্ত্রণ ও দিক নির্ধারণ ব্যবস্থা। এছাড়াও, পেলোড-২, ফার্স্ট স্টেজ, সেকেন্ড স্টেজ, বুস্টার, নোজেল, প্রধান ইঞ্জিন অন্যতম।

রকেট ইঞ্জিন ঃ রকেট ইঞ্জিন গতানুগতিক ব্যবহারসিদ্ধ ইঞ্জিনের মতো নয়। সাধারণ ইঞ্জিন জ্বালানীগুলোকে উত্তপ্ত করে যা পরে কিছু পিস্টনকে ধাক্কা দেয় পরবর্তীতে তা ঢিলে হয়ে যায়। কাজেই কোনো গাড়ী বা চাকাযুক্ত যানের চাকা ঘুরানোর জন্যে ইঞ্জিন পর্যাবৃত্ত শক্তি ব্যবহার করে। বৈদ্যুতিক মোটরগুলোতেও এই পর্যাবৃত্ত শক্তি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু একটি রকেট ইঞ্জিন চলার জন্যে কখনো পর্যাবৃত্ত শক্তি ব্যবহার করে না। রকেটের ইঞ্জিনগুলো হলো রি-এ্যাকশন ইঞ্জিন। রকেটের নীতি এ রকমঃ যে জ্বালানীটুকু রকেটের মধ্যে থাকে সেটুকু একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় এবং পেছন দিয়ে বেরিয়ে আসে। এই বিক্রিয়ার কারণেই রকেট সামনের দিকে চলতে শুরু করে। এটি স্যার আইজ্যাক নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্রের একটি চমৎকার উদাহরণ। রকেটের পিছে ধাক্কা দিয়ে উপরে ওঠার শক্তিকে পাউন্ডের সাহায্যে মাপা হয়। ১ পাউন্ড হলোঃ ১পাউন্ডের বস্তুকে মধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে স্থির রাখতে যতটুকু বল দরকার ততটুকু। রকেটের সামনে যাবার এই ধাক্কা’র জন্যে ২ ধরনের জ্বালানী ব্যবহার করে। কঠিন জ্বালানী অথবা তরল জ্বালানী। রকেট কী ধরণের জ্বালানী ব্যবহার করবে এই নিয়মানুসারে একে দুটি শ্রেণীতে ভাগ হয়েছে।

কঠিন পদার্থের জ্বালানী ব্যবহৃত রকেট ঃ কঠিন জ্বালানী ব্যবহৃত রকেটই ইতিহাসের সর্বপ্রথম রকেট। এই রকেট প্রথম প্রাচীন চীনাদের দ্বারা আবিষ্কৃত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হচেছ। যে সব রাসায়নিক পদার্থ রকেটের কঠিন জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয় ঠিক সে রকম কিছু পদার্থ বারুদ তৈরীতেও ব্যবহার করা হয়। রকেট আর বারুদের রাসায়নিক গঠন পুরোপুরি এক নয়। রকেট তৈরী করার জন্য দরকার পুরোপুরি শুদ্ধ জ্বালানী। কিন্ত বারুদ তৈরীতে তার প্রয়োাজন হয় না। কেননা বারুদ বিস্ফোরিত হয় যা রকেটের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা একেবারেই প্রযোজ্য নয়। তাই রকেটের জ্বালানী তৈরীতে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে যার জন্য জ্বালনী তাড়াতাাড়ি পুড়বে কিন্ত বিস্ফোরিতো হবে না। কিন্ত এরকম রকেট ইঞ্জিনের একটি বড় সমস্যা আছে। এদেরকে একবার চালু করা হলে আর থামানো যায় না। অর্থাৎ এরা আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তাই, এরকম রকেট মিসাইল ছুড়তে ব্যবহার করা হয় অথবা অনেক সময় মহাকাশ যানের সহায়ক হিসেবে পাঠানো হয়।

তরল পদার্থের জ্বালানী ব্যবহৃত রকেট ঃ এই ধরণের রকেট প্রথম Robert Goddard১৯২৬ সালে প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন। এধরনের রকেটের নকশা উপলব্ধি করা মোটামুটি সহজ। জ্বালানী ও জারক। Goddard প্রথম রকেট তৈরীর সময় পেট্রল এবং তরল অক্সিজেন ব্যবহার করেছিলেন যা Combustion Chamber এ পাম্প করা হয়। এর ফলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তার জন্যে রকেট সামনে চলতে শুরু করে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রসারিত গ্যাস একটি সরু নল দিয়ে প্রচন্ড বেগে বের হয় এবং রকেটও প্রচন্ড বেগে চলতে শুরু করে।

রকেট বডি ঃ রকেটের বডি বা দেহ তেমন কোনো প্রভাবশালী জিনিস নয়। রকেটের দেহের কাজ হলো জ্বালানী ধারণ করা। আবার মাঝে মধ্যে এটি একটি ফাঁপা সিলিন্ডার হিসেবেও কাজ করে। কারণ এটি বায়ুর সঙ্গে যোগাযোগকৃত পৃষ্ঠিয় দেশকে হ্রাস করে। রকেটের দৈর্ঘ্য বলে দেয় যে রকেটটি কী রকম কাজ করবে। রকেটের দেহ যত বড় হবে সেটি তত বেশি পৃষ্ঠীয় দেশ সৃষ্টি করবে। এর ফলে পৃষ্ঠিয় দেশ বড় হবে যার ফলে এটি সোজা পথে উড়বে। এ কারণেই, অনেক রকেটে পাখনা ব্যবহার করা হয় পৃষ্ঠীয় দেশ বাড়াবার জন্যে এবং রকেটের পশ্চাদ্ভাগ স্থির রাখার জন্যে।

নোজ কোণ রকেট ঃ  নোজ কোণ রকেটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। নোজ কোণ দেখলেই বোঝা যায় এটি বায়ুমন্ডল জোর করে ভেদ করার জন্য তৈরী হয়েছে। অনেক বছর ধরে অনেক রকম নোজ কোণের নকশা  তৈরী করা হয়েছে। বেশিরভাগ নোজ কোণই বায়ুগতিবিদ্যা অনুযায়ী বন্দুকের বুলেটের নকল নকশা এর মতো হয়ে থাকে। কোনো রকেট কতো দ্রুত বায়ুমন্ডল ছেদ করবে তা নির্ভর করে নোজ কোণের উপর। রকেটের সুপারসনিক গতির জন্য নোজ কোণ হতে হবে শঙ্কু আকৃতিবিশিষ্ট। কেননা এটা খুব সহজে বায়ুমন্ডল ছেদ করতে পারে কোনো বাধা ছাড়াই। কিন্ত সাব-সনিক গতির জন্য দরকার গম্বুজাকৃতির নোজ কোণ। কেননা এটি সামান্য প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে কারণ এর পৃষ্ঠীয় দেশ বেশি বড় নয়। সূত্র ঃ রকেট - উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ।

রকেট কবিতার নমূনা ঃ যারা এই মুহূর্তে রকেট কবিতা চর্চা করছেন; তাদের কতিপয় নমূনা দেয়া হলো ঃ



রকেট কবিতা- নৃত্য
সামসুন্নাহার ফারুক  


নৃত্য
ঘুঙুর
তবলার
বোলচাল
কশেরুকা
কসরত
মনোহর
শিল্পকলা
নটবর নাচেরে নাচেরে
গলে গলে ঝরে নক্ষত্রের স্রোত
ফিউশনে ফিউশনে শরীরী ঝিলিক
জীবনের ঘরানায় আনবাসনা কীর্তন
সুকুমার     সঞ্চালন
অম্লজান     নিঃস্বরণ
আড়াঠেকা   নৃত্যকলা।...

(কবিতাটি সেন্টার এলাইনমেন্ট করে নিবেন প্লিজ, তাহলে রকেট আকৃতির হবে।)


রকেট কবিতা - ১
শেখ সামসুল হক

ধ্বনি
প্রতিধ্বনি
ব্যস্ত ঢোলক
নাকের নোলক
আকাশ আঙ্গিনায়
বিদ্যুৎ চমৎকায়
হরিজন আনমন
নেশা লোকে সারাক্ষণ
বুদ হয়ে রয় জাগে ভয়
চিত্ত ঘিরে আতস বাজীর বাজনায়
খেলারাম খিলবিল করে হাতুড়ি পেটায়
মিরাকল স্মৃতির মগজ জুড়ে কানামাছি
খেলে যায় নির্দিধায় রাত তিনটার আইবলে
কী করে এমন হলো  
জানতে চাও না কেন
না জানার কারণ কী
তা হতে পারে না আজ।


(সেন্টার এলাইনমেন্ট করলে রকেট আকৃতির হবে)

নীলক্ষেত, ঢাকা ঃ ১৫-০৬-২০১৬


রকেট কবিতা - ১৬

রীনা তালুকদার

বলছো
দাওনি
কিছুই
যা দিয়েছ
অফুরন্ত
সে ভান্ডার
মুখোমুখি
ইলেকট্রন
কণা, প্রোটন
নিউট্রন নিউক্লিয়াস নিউরণে
আইবলে আহুত আমরণ আমন্ত্রণে
স্বর্ণালী সন্ধ্যার সবুজ সোডিয়াম ঝুলবাতি
সূর্যকাল যাপন জোনাকিরা নয় এলিয়েন সাথী
মঙ্গলের ছায়া রাত্রীকে জড়িয়ে আহলাদী চুড়ুইবাতি
জড়িয়ে পাজরে
তাপের বাসরে
সুখের আসরে
হৃদয় নাচেরে
আকাশে বাজেরে
মেঘেরা সাজেরে।

এলিফ্যান্টরোড, ঢাকা ঃ ০৮-১১-২০১৬

(কবিতাটি সেন্টার এলাইনমেন্ট করলে রকেট আকৃতির হবে)