বিরহ বুঝিনি এতোকাল
সন্ধ্যার কোনো গোধুলী চোখে পড়ে না ইদানিং
মোবাইল ঘড়ি দেখে দেখে
রাত দিন সকাল দুপুর সূর্যাস্ত -উদয় বুঝে নেই
দেয়াল ঘড়িতে ঘর গেরস্থ
মোবাইল ঘড়িতে বর্হিকর্ম
এমন একদিন ছিল -
সুখময় সন্ধ্যার চায়ে বসন্ত বাতাস খেলে যেতো
গল্পের চোরাবালি চোখ পলকহীন মিতালীতে ওঠতো মেতে
দুপুরেরা ব্যস্ততার ঝাঁকে অলক্ষে পার হয়ে যেতো
সকাল ঘুম ভাঙতো রেটিনায় বসে থাকা
প্রশান্তির সেই ছবি দেখে
ব্যথাতুর চোখে নিশিকালের কাব্যমদিরতা
ঘুমালেও প্রিয় মুখ মুছে যেতো না
তখন ছিলোনা বিরহ বেদনা
শত শত গল্পের ঝাঁক পার হয় স্মৃতির মনিটরে
নিঃশব্দ চাহনি অতীতের আয়নায় তাকিয়ে
নিজের সাথে হাজারো প্রশ্নের বাক্য বিনিময়
প্রশ্ন করি উত্তর খুঁজি; শব্দের কাছে দাঁড়াই
রহস্য ঘেরা স্মৃতির ক্যানভাসে
সেই মুখশ্রী সরল সতেজ বোকা হাসি
নেই কোনো রাখঢাক
অভিমানের খেদোক্তি নেই
কঠিন করে কিছু পাবার আকুতি নেই
কাজের ভিড়ে ক্লান্তি নেই এখনো
কেবলই চকলেট মাখা সেই ঠোঁটে
সোহাগের সুললিত সুধীর বাণী
যত ইচ্ছের কথা স্বাধীনতায় বলতে পারা
একনিষ্ঠ শ্রোতার এইটুকুই প্রাপ্তি
তবুও ব্যাথার জল নেই হৃদয়ে
বুঝিনি তখনো বিরহ বেদনা
এইতো সেদিন ছাদের বাগানে
নীল গোলাপ দেখে হাসোজ্জল
মুখে তাকিয়ে ছিলে আমার দিকে
তাকিয়ে থাকতে থাকতে স্বর ছোট হয়ে এলো
বললে : চলো . ..
সিনেমার দৃশ্য চিত্রায়ণ করি বলেই
আবেষ্টনীতে ব্যাদান বুকের বারান্দায়
দোয়েল শিস তুলে
শাশ্বত সন্ধ্যা মুখরিত ক’রে দিলে অগ্নিময় চুমুতে
সেদিন দূরত্বের সংজ্ঞা ছিলোনা জানা
কাছাকাছি দুজন আসতে না পারার যন্ত্রণা সীমাহীন
পৃথিবীর চোখে আমরা কালোছাপ
আমাদের বুকে বুকে বেজে চলে নিরন্তর মে দিবস
না পাবার তীব্র ব্যাকুলতার আগুন দাউ দাউ
আমাদের কানাকুয়ো চোখে কারখানার শ্রমিকের হা-হুতাস
গলা জড়িয়ে ঘুমাবার নিশ্চিন্ত রাত গেছে হারিয়ে
সময়ের ওড়া ফানুসে
এখন সময় যায় অকারণ খই ভেজে শূন্যতায়
তুমুল বর্ষণের রাত শীতেল শরীর
জমাট পাথরে অসাঢ় চরাচর
একা একা লাগে ভীষণ
এখন আমি বিরহ বেদনা বুঝি!