সাজান বালিশের ওপর,
তেল-চুকচুকে মাথাটা পড়তেই,
চোরাবালির মতো,
ভেদে চলে যায় অনেকটা।
টিউবলাইট বন্ধের তৎক্ষনাৎ
অসহায় আঁধার ছায় চতুর্দিকে।
যেখানে চোখ বন্ধ করলেও
আলোক মেলা ভার।

চশমাহীন পৃথিবীতে,
অন্ধকার একমাত্র আশ্রয়।
দেখা যায় না কিছুই
দেখার ইচ্ছেও থাকে না।
যতই রাত হোক-
তবু বন্ধ হয় না চোখ।

দেখতে থাকি সম্মোহনী ফ্যান,
বাইরের আলোকবিপুলতা।
তখন,
গ্রীলের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীটাকে দেখা যায়।

রাত্রির কাছে গচ্ছিত রাখা,
কিছু দুর্বিষহ অনুভূতি।
তখন চাগাড় দিয়ে ওঠে।
তখন পাশবালিশটাকে
চেপে ধরে রাখতে ইচ্ছে হয়।

রাস্তার ওপর দিয়ে তখন,
দামাল বাইক গুলো,
নাক টানার আওয়াজ করে
ঘোড়ার গতিতে চরে বেড়ায়।
সেই আলো,
আলোর গতিতে ভেদ করে যায় গ্রীল;
গ্রীল থেকে সিলিঙে,
ফ্যানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেই আলো
চতুর্দিকে পেঁজা তুলোর মতো
ছিটকে,
একাকার হয়ে যায় আমার রক্তের সঙ্গে।
সেই মুহূর্তে নিজেকে জ্বলন্ত
সিগারেট মনে হয়।

বাইরের চিকু গাছটা
মুক্ত ছন্দ কবিতার মতো
দাঁড়িয়ে থাকে স্বর্গের আশ্বাসে।

দুরদিগন্তবিস্তৃত মাঠও যেন
নীল-নব-নভমন্ডলের রঙে রঞ্জিত হতে চায়।
তারাগুলোর সঙ্গে তখন
শিশিরের অনেক তুলনা পাই।

প্রত্যেকটা দুব্বো ঘাস,
আমার দিব্যদর্শনে কেঁদে ওঠে।

দেশলাই জ্বালানর সময়,
বিচ্ছুরিত হয় আম্র-মুকুলের সুবাস।

এই সব মুহূর্তে
বাইরের প্রত্যেকটা কুকুর-বেড়াল
এই স্তব্ধ কন্সার্টের অংশিদারি চায়।
তারাও ককিয়ে অঠে নিজেদের বিষন্ন ধ্বনিতে।

সারা রাত চলে কন্সার্ট।

ঘুম ভাঙে না।

ঘুম আর বোধহয় ভাঙবেই না।