হঠাৎ অন্ধকার ছেয়ে সকল দিকে,
নিভিল প্রদীপ। চমকি উঠি রমণী
হতে আড়াল তার স্নিগ্ধ চিকন চিকে,
বাতাস বয়ে বাজে নূপুর রিনরিনি
বাসরঘরে। ফটাক ফটফটি উঠি,
ধাক্কা দেয় সে মল্লযোধীর শক্ত মুঠি।
গগনে ছাইয়া কৃষ্ণাক্ষি মেঘ, বরিষে
বারিধার। তীব্র বেগে আকাশ হতে সে।
রাজপুতিয়া তরবারীর ন্যায় বহিছে
রোষ। তার তরবারীর বর্ষা সিক্তিছে
রক্তধারার ন্যায়। বারি বর্ষে ধরায়,
যেন গঙ্গাগাঙে তোলপাড় সে বন্যায়।
রমণী এলোবেশে বসিছে ভূমি 'পরে,
সহাস্যে তখনি বজ্রবিদ্যূৎ ঝলকারে-
আলোকি ভয়ার্ত মেঘরাশি। অবিরতে
চলে সে বজ্রবাদন নবগগনেতে।
বরিষে চলে তান্ডব। মানে না যে বেলা,
চলে দিগন্তের মদ্যমত্ত লিলাখেলা।
নভে নবীন তপন ম্লানালোকজ্জ্বল,
শরমী পড়ে ঊষা উদিতে এ গগনে।
কাটি-উঠি সূর্য হতে বর্ষা-মেঘ-দল
মাতিয়া মলিন কবি রবির মননে।
রশ্মি ঠিকরি পড়ি নদীর তরী-তীরে
খিলিখিলি জ্বলি দীপ আলোকের ভিড়ে।
থামিছে অনন্তকালব্যাপি বারিপাত,
সরিছে জনগনের মাথা হতে হাত।
শান্তিমাত্র মুহূর্তের; হঠাৎ বজ্রপাতে,
মুক্তছন্দে নামে বর্ষা এলোচুলো স্রোতে।
ঝমকি-ঝমকি ঝরে বরষার ঝর্ণা।
বর্ষা বাসরে পাসরি কাঁসর-কঙ্কনা-
মুর্ছনা ধ্বনি। নূপুর ঘুঙুর নিক্কন
ন্যায় ঝরে পৃথ্বি-ভালে তালে আনমন,
আজ শ্রাবনের নদীতীরে অকারনে,
বয়ে বায়ু বেগে মোর অক্ষি-নৌকা সনে।।